১৬শ গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

সিলিন্ডার কেটে স্ক্র্যাপ লোহা বিক্রি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ জুন, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

গ্যাস সিলিন্ডার কেটে স্ক্র্যাপ করে বিক্রি করার মহোৎসব থামানো যাচ্ছে না। সীতাকুণ্ডে গড়ে উঠা সংঘবদ্ধ একাধিক চক্র দেশের নানা অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে হাজার হাজার গ্যাস সিলিন্ডার কেটে স্ক্র্যাপ করে বিক্রি করছে। স্ক্র্যাপ লোহার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে চক্রটি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সংস্থাকে ম্যানেজ করে চক্রটি বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানিকৃত লোহা দিয়ে তৈরি মূল্যবান এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কেটে বিক্রি করছে। সীতাকুণ্ডের একটি আস্তানা থেকে দশ হাজারের বেশি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধারের মাত্র দিনকয়েকের মাথায় র‌্যাব আবারো কাটার জন্য জড়ো করা ১৬শ গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার এবং চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে উঠা ২৭টি এলপিজি অপারেটর আমদানিকৃত লোহা দিয়ে তৈরি করে এবং কোনো কোনো অপারেটর চড়া দামে কিনে দেশে হাজার হাজার গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ দিয়েছে। এসব কোম্পানি উক্ত সিলিন্ডারগুলোতে নিজেদের এলপি গ্যাস বোতলজাত করে বিক্রি করে আসছে। একটি এলপি সিলিন্ডার গড়ে ২ হাজার ৮শ টাকায় কিনে কোম্পানিগুলো মাত্র ৮শ থেকে ১ হাজার টাকায় গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতিটি সিলিন্ডারে আঠারশ থেকে দুই হাজার টাকা ভর্তুকি দেয়া হয় পরবর্তীতে ব্যবসা করার জন্য। একটি গ্যাস সিলিন্ডার কমপক্ষে বিশ বছর ব্যবহার করা যায়। উক্ত গ্রাহক পরবর্তীতে ওই কোম্পানি থেকে গ্যাস রিফিল করে নেবেন। এই রিফিল খাতে কোম্পানি মুনাফা করে থাকে।

সীতাকুণ্ডে গড়ে উঠা সংঘবদ্ধ চক্রগুলো এসব সিলিন্ডার সারাদেশ থেকে নানা কায়দায় সংগ্রহ করে নেন। পরবর্তীতে তা কেটে স্ক্র্যাপ করে বিভিন্ন রি রোলিং মিলে বিক্রি করে দেয়া হয়। সীতাকুণ্ডের তুলাতলী এলাকায় গত ৯ জুন অভিযান চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা কাটার জন্য জড়ো করা ১০ হাজার সিলিন্ডার জব্দ করে। ওই সময় সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা কুসুম প্রকাশ এলপি কসুমসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

ওই অভিযানের মাত্র দিনকয়েকের মাথায় গত শুক্রবার একই এলাকায় (তুলাতুলি) অভিযান চালিয়ে একটি তেলের ডিপোর ভিতর অবৈধভাবে জড়ো করা ১৬শ গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। সীতাকুণ্ডের তুলাতলী এলাকায় বর্ণিত অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হল- মৃত মোহাম্মদ মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মৃত জামাল উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন এবং লক্ষীপুরের রামগঞ্জের কুলসুমা মোল্লাবাড়ির মৃত সিরাজ ভূঁইয়ার পুত্র মোহাম্মদ জহির হোসেন। উদ্ধারকৃত গ্যাস সিলিন্ডারের আনুমানিক মুল্য প্রায় ৩৪ লাখ টাকা।

র‌্যাব জানিয়েছে, চক্রটি দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন কোম্পানির মূল্যবান গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে কেটে স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করে আসছিল। এই ব্যাপারে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও সূত্র জানায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজামায়াত নেতা হেলালী গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালী এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে শ্রমিক আহত