১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ছিনতাই নাটক

শেষ রক্ষা হলো না স্বর্ণ দোকান কর্মচারীর

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১১ জুলাই, ২০২১ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বাসের চড়া দাম দিতে হতো স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিককে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে শেষ রক্ষা হয়। সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের মালিক প্রদীপ বণিক। দুই বছর ধরে তার আস্থাভাজন কর্মচারী ছিল সুদীপ্ত সাহা টিংকু। এ প্রসঙ্গে প্রদীপ বণিক আজাদীকে বলেন, করোনার কারণে বাসা থেকে কম বের হই। আমার এটিএম কার্ডের সব পিন নম্বর টিংকুর জানা ছিল। আগেও একাধিকবার বুথ থেকে টাকা তুলেছে। এমন বিশ্বস্ত কর্মচারী শেষ পর্যন্ত করলো অবিশ্বাসের কাজ। তিনি আরও বলেন, ৮ জুলাই রাতেই টিংকুকে ৪টি এটিএম কার্ড দেওয়া হয়। পরদিন ১২ লাখ টাকা তুলে বেলা ১১টায় বাসায় ফেরার কথা তার। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত না আসায় এবং ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে থানায় অভিযোগ করি। বিকাল ৪টায় আমাকে ফোন করে তার সাজানো ডাকাতির ঘটনার কথা জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তার সুদীপ্ত সাহা প্রকাশ টিংকু (৩৫) রাঙ্গুনিয়ার স্বনির্ভর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজন বাড়ির অসীম সাহার ছেলে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, ৯ জুলাই বিকেল চারটার দিকে আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী প্রদীপ বণিক থানায় এসে অভিযোগ করেন, তার ১২ লাখ টাকা ডাকাতি হয়েছে। দোকানের কর্মচারী সুদীপ্ত সাহা টিংকু চারটি এটিএম কার্ড দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগ্রাবাদ সিএন্ডএফ ভবনে অবস্থিত একটি বুথ থেকে টাকা তুলে বাসায় আসার পথে এই ডাকাতি হয়। এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আসার সময় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস থেকে ৪-৫ জন লোক নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে গাড়িতে উঠতে বলে। তিনি গাড়িতে উঠতেই তার সাথে থাকা ১২ লাখ টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে মামলা দেওয়ার ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে গাড়ি বান্দরবানে গিয়ে থামে। সেখানে হাত ও চোখ বেঁধে তাকে পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ফোন করে প্রদীপ বণিকের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসেন টিংকু।
ওসি মহসীন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা প্রথমে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে টিংকুর বান্দরবানে অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। তার বর্ণনা অনুযায়ী, বুথের সামনে মাইক্রোবাসও দেখা যায়। কিন্তু সেই গাড়িতে তাকে তুলে নেওয়ার দৃশ্য বা তথ্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ভিডিও ফুটেজ দেখা হয়। টিংকুকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা আবারও জানার পর কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। রাতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর টাকাগুলো তিনিই আত্মসাৎ করেছেন বলে স্বীকার করেন। ডাকাতির ঘটনা পুরোটাই তার সাজানো। ঘটনা সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য এবং পুলিশের কাছেও কল লোকেশন যেন বান্দরবান আসে, সেজন্য নিজেই সেখানে চলে যান। এরপর তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা এলাকায় টিংকুর বোনের বাসা থেকে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঢাকা-কক্সবাজার রেল প্রকল্প হচ্ছে সর্বোচ্চ ব্যয়ের
পরবর্তী নিবন্ধইংল্যান্ডের প্রথম নাকি ইতালির দ্বিতীয়