হেফাজত নেতা ফয়েজীর বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় ধর্ষণ মামলা

হাটহাজারী প্রতিনিধি | শনিবার , ৮ মে, ২০২১ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় এক মহিলা ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ মামলা দায়ের করা হয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবদুল্লাহ আল মাসুম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে এই নারী অভিযোগ করেন ২০১৯ সালে আল্লামা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর সাথে ফেইসবুকের মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে উভয়ের মধ্যে ফোনালাপ এবং মেসেঞ্জারের মাধ্যমে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এক পর্যায়ে নোমান ফয়েজী বিয়ের প্রলোভন দেখালে কথিত মহিলা হাটহাজারীতে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। দীর্ঘ এক বছর পর্যন্ত শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুললেও বিয়ে না করে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিতে থাকেন। এক বছর পর ওই মহিলা হাটহাজারী থেকে তার এক আত্মীয়ের বাসায় চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন। সেখানে গিয়েও নোমান ফয়েজী বিভিন্ন সময় হোটেল কিংবা বাসায় ওই মহিলার সাথে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতেন বলে হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬, ২৭, ২৮ মার্চ দেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করে হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এই সহিংস ঘটনায় হাটহাজারী থানা ডাকবাংলো, সদর তহসিল অফিস, সহকারী কমিশন ভূমি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভে সহকারী কমিশনার ভূমির সরকারি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হাটহাজারী নাজিরহাট মহাসড়কে দেওয়াল নির্মাণ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি ডাকবাংলোতে অবস্থানকারী একজন শিক্ষা নবিশ এ এস পি, থানার একজন উপ পরিদর্শককে মারধর করে এবং ডিএসবি’র একজন কনস্টেবলকে ধরে নিয়ে মাদ্রাসায় আটকে রেখে তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনায় থানার দুইজন উপ পরিদর্শক এবং ডিএসবি’র ভুক্তভোগী কনস্টেবল বাদী হয়ে থানায় পৃথক তিনটি মামলা রেকর্ড দায়ের করেন। এই তিন মামলার দুইটি মামলায় জাকারিয়া নোমান ফয়েজীকে বিবাদী করা হয়। এসব মামলায় ১৪৮ জনের নামোল্লেখসহ তিন হাজার জনকে বিবাদী করা হয়। থানায় মামলা রেকর্ডের পর ফয়েজী আত্মগোপন চলে যান। গত ৫ মে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তাকে কঙবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ফয়েজী একাধিক নারীর সাথে তার বিয়া বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে ভুক্তভোগী ওই নারীকে খুঁজে পায়। আর ওই নারীই তার বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন। হাটহাজারী সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন ধর্ষণ মামলা রেকর্ডের কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুখে মাস্ক নেই, আছে অজুহাত
পরবর্তী নিবন্ধখালেদার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা