হাত পেতে নয় আত্মমর্যাদা নিয়ে চলব : প্রধানমন্ত্রী

| রবিবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাতৃভাষার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতির পিতা যে সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন, তার মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ। আর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চলতি বছরের একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের দেশ। এই বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, সম্মানের সাথে চলবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলব। খবর বিডিনিউজের।
ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ-বাঙালির সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের কথা অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা যখন আমাদের ওপর একটি বিজাতীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল, তখন ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে করাচিতে একটি শিক্ষা সম্মেলন হয়। সেখানেই ঘোষণা হয়েছিল ঊর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু ঊর্দু কোনো মাতৃভাষা না আর পাকিস্তান নামে যে দেশটি হয়েছিল, তার জনসংখ্যার ৫৬ ভাগের ওপরেই আমরা বাঙালি। আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা। কিন্তু সেই বাংলা ভাষা বাদ দিয়ে বিজাতীয় ভাষা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ঘোষণাটা পূর্ববঙ্গে আসার সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তখন প্রতিবাদ জানায়। তখনকার যিনি মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীও বলা হত, তার বাড়ির সামনে গিয়েও তারা সেখানে প্রতিবাদ জানিয়ে আসে। এরপর ১৯৪৮ সালে চৌঠা জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ নামের সংগঠন গড়ে তোলেন এবং তারই প্রস্তাবে এই ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই কিন্তু মূলত আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। কারণ যারা আমাদের ভাষার ওপর আঘাত করেছে, তাদের বিরুদ্ধেই তিনি প্রতিবাদ শুরু করেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবদীপ্ত অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ২১ বিশিষ্ট নাগরিক ও তাদের প্রতিনিধিদের চলতি বছরের একুশে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পদক তুলে দেন।
পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের বলতে গেলে রক্ত দিয়ে… শুধু মাতৃভাষায় কথা বলা না, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল, আমরা তাদের প্রতি সম্মান জানাই। আপনারা আজকে আমাদের ভাষা শহীদ এবং ভাষা সৈনিকদের নামে পুরষ্কার পেয়েছেন, আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, যারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিশেষ অবদান রেখে আজকে এই পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।
আগে অল্প কয়েকজনকে এই সম্মাননা দেওয়া হলেও এখন সরকার ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ২১ জনকে এই সম্মাননা দিচ্ছে এবং পুরষ্কারের অর্থও বৃদ্ধি করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪০ প্রতিষ্ঠানকে ইংরেজি সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলার নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধভালোবাসায় ভাষা হোক সজীব