হাই কোর্টে জামিন মেলেনি সাবরিনার

| বুধবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির মামলায় হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবারও ব্যর্থ হলেন জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন। তার আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে গতকাল মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাই কোর্ট বেঞ্চ। এর আগে গত ৩ নভেম্বর হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়েছিল।
এবার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম। খবর বিডিনিউজের। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জজ আদালতে সাবরিনার জামিন আবেদন খারিজ হলে তিনি হাই কোর্টে আসেন। ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় খারিজ হলে তিনি নতুন বেঞ্চে সেই আবেদন তোলেন। জালিয়াতির এ মামলা বর্তমানে হাকিম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী গত ২০ আগস্ট সাবরিনা ও তার স্বামী জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ার।
কিন্তু জুনের শেষ দিকে অভিযোগ আসে, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল জেকেজি। নমুনা পরীক্ষা না করে রোগীদের ভুয়া সনদও তারা দিচ্ছিল।
এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকার কামাল হোসেনের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে তাদের কম্পিউটার থেকে চারজন প্রবাসীরসহ ৪৩ জনের নামে তৈরি করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া যায়। পরদিন কামাল হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন ওই দুজনের বিরুদ্ধে। সরকারি নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ, কাজে অবহেলার মাধ্যমে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রামণ বিস্তারের ঝুঁকি তৈরি, করোনাভাইরাসের সনদ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল চৌধুরী, তার বোন জেবুন্নেছাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১২ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গ করায় ইতোমধ্যে সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গত ৫ আগস্ট এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করলে তার ভিত্তিতে ২০ আগস্ট অভিযোগ গঠন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউহানে আক্রান্ত হিসাবের ১০ গুণ বেশি
পরবর্তী নিবন্ধ১ কোটি ১৭ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা