সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮

নগরীতে বাস চাপায় ৩ জনসহ নিহত ৬ ।। কর্ণফুলীতে মারা গেছেন ২ জন

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৯ জুন, ২০২১ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

পৃথক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রামে একদিনে সড়কে ঝরেছে ৭ প্রাণ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার নিহত হয়েছেন আরো ১ জন। দুদিনে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। নগরীতে তিন দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্ণফুলী উপজেলায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে মারা গেছেন ২ দুজন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ১৯ জন। নগরীর ইপিজেড থানাধীন স্টিল মিল বাজার এলাকায় গতকাল দুপুর ১২টায় বাস চাপায় শিশুসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। পাহাড়তলী থানাধীন রানি রাসমনি ঘাট এলাকায় গতকাল ভোরে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ১ জন মারা যান। এছাড়া খুলশী থানাধীন জিইসি মোড়ের ফ্লাইওভারে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়। স্টিল মিল বাজার এলাকায় নিহতরা হলেন আরফা বেগম (৪৫), আয়েশা আক্তার মিম (৮) ও রেজাউল করিম (২৪)। খুলশীর ফ্লাইওভারে নিহত ব্যক্তি হলেন মো. তামিম (২০)। পাহাড়তলীতে নিহত হন গোপাল দাশ (৪৫)।
এদিকে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন কালামিয়া বাজারের লিজা গার্ডেনের সামনে অজ্ঞাত মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বিল্লাল মিয়া (৬০) নামের এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি কালামিয়া বাজারের কালা গাজীর সন্তান। এ সময় আলামিন (১৮) নামে অপর এক পথচারী গুরুতর আহত হন। তিনি আনোয়ারার রুহুল আমিনের ছেলে। গতকাল সন্ধার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শীলাব্রত বড়ুয়া জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসআই শীলাব্রত বড়ুয়া আজাদীকে বলেন, স্টিল মিল বাজার এলাকায় চলন্ত বাসের চাপায় রিকশার যাত্রী ও পথচারীসহ ৩ জন নিহত হন। এর মধ্যে আরফা বেগম ও আয়েশা আক্তার মিম সম্পর্কে নানি-নাতনি। তারা স্টিল মিল বার্মা কলোনি এলাকায় বসবাস করতেন। রেজাউল করিম স্টিল মিলের খাল পাড়ের আইনাল হকের ছেলে। অন্যদিকে জিইসি এলাকার ইউনেস্কো সেন্টারের সামনে নিহত মো. মো. তামিম হাটহাজারীর ধলই এলাকার মো. শাহ আলমের সন্তান। মোটরসাইকেল চালিয়ে তিনি হামজারবাগ এলাকার বাসায় যাচ্ছিলেন। পাহাড়তলীর নিহত গোপাল দাশ দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার হরিলাল দাশের ছেলে।
কর্ণফুলীতে নিহত ২
পটিয়া প্রতিনিধি জানান, কর্ণফুলীতে বিআরটিসি বাস, মিনি বাস ও সিএনজি টেক্সির ত্রিমুখী সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও প্রায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর আড়াইটার সময় চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের উপজেলার শিকলবাহা ফসিল সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন পটিয়ার দক্ষিণ মালিয়ারা গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে নুরুল আবসার (৪৮) ও অজ্ঞাত আনুমানিক ১৮ বছর বয়সী এক অজ্ঞাত যুবক।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ১৮ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে ডেইজি সর্দার (৩৫), রুবেল (৩২), সুমন দে (২৮), সুমন চৌধুরী (৩০), রিটন দেব (৪৫), রহমত আলী (৪৫), পিল্টু দাশ (৩০), কবির বিশ্বাস (৫০), বেলাল (৩৭), মুজিবুল্লাহ (৫৫), ইরফান (২৩), রিজিয়া বেগম (৩৫), সোহাগ মিয়া (৩২) এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৩২ ও ২৫ বছর বয়সী ২ পুরুষকে। এছাড়া ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে মো. ইদ্রিসকে (৫০)।
খবর পেয়ে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ২ জনের লাশ উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী বিআরটিসির বাস, সিএনজি ও লোকাল বাসটির সামনের অংশ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ঘটনার পরপর উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয় চট্টগ্রাম কালামিয়া বাজারের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিট। এর আগে কর্ণফুলী থানার ওসি মো. দুলাল মাহমুদ ও ট্রাফিক টিআই আনোয়ারুল আজিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বেলা ৪টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের শিকলবাহা এলাকায় একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে বিআরটিসির বাস, লোকাল বাস ও সিএনজি টেঙির ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। নারী, পুরুষ, শিশুসহ অন্তত ১৮ জনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি গাড়ি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখোঁজ মিলেছে আবু ত্ব-হা আদনানের
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে মাঝারি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস