স্বাস্থ্যকর পৃথিবীতে অস্বাস্থ্যের অনুজীব-খাদ্যে ভেজাল

মিতা পোদ্দার | মঙ্গলবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল হলো খাদ্য। সংবিধানের ৩২নম্বর অনুচ্ছেদে খাদ্যকে জীবনের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। অথচ যেই খাদ্য খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকার ভরসা পায় সেই খাদ্যেই এখন জীবন নাশের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিভিন্ন জরীপে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে ভেজাল খাদ্যের পরিমাণ এতটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, তৈরি অথবা কাঁচা কোন খাদ্যদ্রব্যের ওপরই মানুষ আর আস্থা রাখতে পারছে না।

বাস্তব উপলব্ধি থেকে ধারণা করা যায় যে মাছ, মাংস,সবজি, ফলমূল ও বিভিন্ন বিপণির তৈরি খাবার, এমনকি শিশু খাদ্যে পর্যন্ত ভেজাল মেশাতে কার্পণ্য করছেনা এক শ্রেণির দুষ্টচক্র। জীবন সংকট বা স্বাস্থ্যসংকটকে আমলে নিয়ে এই সাধু মানুষগুলো দিনের পর দিন ভেজাল মিশিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে বিচিত্রভাবে খাদ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। ভোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এক শ্রেণির দুষ্টচক্র বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় খাদ্য দ্রব্যে প্রতিনিয়ত ভেজাল মেশাচ্ছে যা সাধারণ জণগনের চক্ষুর অগোচরে।

দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য যে ভিটামিন আমাদের প্রয়োজন সেইসব ফলমূলে বিশেষ করে আম,আনারস, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল ক্যালসিয়াম, কার্বাইড, ইথেল ও ইথালিন দিয়ে কৃত্রিমভাবে পাকানো হয়। এইসব ফলমূলকে তাজা রাখার জন্য ফরমালিন ব্যহার করা হয়। যেখানে রোগ নিরাময়ে এসব ফলমূল পথ্য হিসেবে সেবনযোগ্য সেখানে এইসব এখন স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দুধ হচ্ছে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য। যা আমিষের চাহিদা বহুলাংশে পূরণ করে। অথচ সেই দুধে মাখন তুলে বা পানি মিশিয়ে ভেজাল দুধ বিক্রি করা হয়। মাছে মেশানো হচ্ছে জীবন ধ্বংসকারী ফর্মালিন, ইথাইল, টিটেনিয়াম পাউডার সহ নানা ক্ষতিকর উপাদান।

এইসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমলমতি নিস্পাপ শিশুরা। খুব সহজেই মারাত্বক অসুখসহ প্রাণের সংকট দেখা দিচ্ছে। এহেন অবস্থা চলতে থাকলে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাছাড়া দেশের চালিকাশক্তি স্তম্ভিত হয়ে পড়বে। পরিশেষে একটাই মতবাদ খাদ্যদ্রব্যে জেজাল প্রতিরোধে বর্তমান সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলকে সম্মিলিতভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অপরাধ। আর এই জঘন্যতম আপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেধাশক্তি ও কিছুকথা
পরবর্তী নিবন্ধনগর পরিচালনায় মহিউদ্দীন চৌধুরী মডেল