মেধাশক্তি ও কিছুকথা

লিটন দাশ গুপ্ত | মঙ্গলবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনেকেই বলে, মেধা হচ্ছে বিশেষ প্রতিভা যা কোনো ব্যক্তি জন্মসূত্রে পেয়ে থাকে। আবার অনেকে মনে করে মেধা জন্মসূত্র প্রাপ্ত নয়, পরিবেশের প্রভাবে মেধাবী হয়ে থাকে। মেধা সম্পর্কে এই রকম যতই তর্ক-বিতর্ক বা পক্ষে-বিপক্ষে মত থাকুক না কেন, আমরা জানি জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা কর্তৃক প্রতি বছর ২৬ এপ্রিল মেধাদিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে অনেক আগেই। তাই বলা যেতে পারে জন্মসূত্রে হোক আর পরিবেশগত হোক, ‘মেধা’ বলতে কিছু একটা আছে।

আমাদের সমাজে একটা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন- কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যদি সকল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়, সেই মেধাবী। আর সনদের প্রভাবে ভালো একটা চাকুরীর পেয়ে গেলে একেবারে দুর্দান্ত মেধাবী হিসাবে পরিচিতি পায়। কিন্তু তার কোনো এক সহপাঠী অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পেয়ে যদি পাশ করে কিংবা পাশ না করে সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনী শক্তিতে সমৃদ্ধ হয়, তাকে আমরা মেধাবী বলতে কার্পণ্যতাবোধ করি। অনেকে মনে করে অর্জিত শিক্ষা দিয়ে বা উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে ভালো একটা চেয়ারে বসে উচ্চপদে চাকুরী করতে পারলেই মেধাবীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ! আর তা যদি হয়, তবে অনেক সাহিত্যিক দার্শনিক বৈজ্ঞানিক স্কুলের চৌকাঠ না পেরিয়েও শত হাজার বছর আগে মৃত্যুবরণ করে এখনো কিভাবে পৃথিবীতে বেঁচে আছে মানুষের মাঝে!

অনেকে মনে করে চেয়ারে বসা মানুষগুলো মেধাবী আর পিঁড়েতে বসা মানুষগুলো মেধাহীন। আমি মনে করি সমাজে শ্রমজীবী কামার কুমার কৃষক জেলে সকলেই মেধাবী অর্থাৎ সবার মধ্যে মেধা রয়েছে। যেমন- কোনো এলাকায় বেশ কয়েকজন কৃষক গতানুগতিক কায়িকশ্রম আর একই প্রযুক্তি একই সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করার সত্ত্বেও কোনো একজন নিজস্ব কিছু মেধা বা জ্ঞান বুদ্ধির মাধ্যমে সূক্ষ্ণ চিন্তা করে নতুন নতুন কিছু করে যাচ্ছে অর্থাৎ অধিকতর ফসল ফলাতে পারছে। তখন বুঝে নিতে হবে ঐ কৃষক মেধাবী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঙলা হোক দুর্বৃত্তমুক্ত সোনার বাঙলা
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যকর পৃথিবীতে অস্বাস্থ্যের অনুজীব-খাদ্যে ভেজাল