ফিলিস্তিনের পক্ষে আমেরিকার যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল

শিক্ষার্থীদের দাবি আসলে কী

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বয়কট করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ইসরায়েল গাজায় যে হামলা চালাচ্ছে তাতে এখনো পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ। এ ধরনের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এরপর থেকে অন্যান্য জায়গাও বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। লস অ্যাঞ্জেলস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং আটলান্টায় বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টেঙাসের অস্টিনে সেখানকার গভর্নর ট্রুপারদের নির্দেশ দিয়েছে বিক্ষোভকারীদের আটক করতে। খবর বিবিসি বাংলার।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সর্বপ্রথম বড় ধরনের বিক্ষোভ হয় কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। যেসব বিশ্ববিদ্যালকে ইহুদি বিদ্বেষের জন্য অভিযুক্ত করা হয় তার মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। গত বৃহস্পতিবার সকালে আটলান্টায় কিছু বিক্ষোভকারী এমোরি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এসে তাঁবু খাটিয়ে বসে যায়। তারা ইউনিভার্সিটির সাথে সম্পর্কিত নয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরবর্তীতে বহিরাগতদের সাথে ইউনিভার্সিটি কমিউনিটির সদস্যরাও যোগ দেয়। সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সেখানে কমেন্সমেন্ট অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটিতে বুধবার লস এঞ্জেলেস পুলিশকে ডাকা হয়েছিল এবং তারা ৯৩ জনকে আটক করেছে। এছাড়া বুধবার রাতে অস্টিনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব টেঙাসে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত সোমবার নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ম্যানহাটন ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ ১২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি চত্বরে একদল শিক্ষার্থী অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে বসে বিক্ষোভ শুরু করে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় আরো অন্তত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এছাড়া কিছু হাইস্কুলেও বিক্ষোভ হয়েছে। বোস্টনের এমারসন ইউনিভার্সিটি, কানেকটিকাটের ইয়েল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ফিলিস্থিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি আসলে কী : বিডিনিউজ জানায়, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবির ভিন্নতা থাকলেও তাদের মূল দাবি হল ইসরায়েল সংযুক্ত কোম্পানি বা ব্যবসার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করা, যেসব কার্যক্রম থেকে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে লাভবান হচ্ছে ইসরায়েল। যদিও বিক্ষোভকারীদের এই দাবির দিকে টলছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর ব্যবসা বা বিনোয়োগ বন্ধে তাদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব নাও পড়তে পারে।

তবে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিনিয়োগ চিত্র প্রকাশ করা, ইসরায়েলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতিকে সমর্থনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে অনড় রয়েছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার কর্তৃপক্ষের কাছে বাক স্বাধীনতার দাবি জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় না আনারও দাবি জানাচ্ছেন তারা। বিক্ষোভকারীরা আরো কিছু দাবি জানাচ্ছেন, যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থানীয় বিষয় সম্পর্কিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুলশীতে বিষপানে নারীর আত্মহত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধফাঁকা বাসায় দাওয়াত দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং