স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে

৯৯৯-এ ফোন পেয়ে উদ্ধার করে পুলিশ, থানায় মামলা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | সোমবার , ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে স্বামীকে বেঁধে তাঁর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাতে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারী নগরীতে একটি কারখানার শ্রমিক। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ খবর পেয়ে নারী শ্রমিক ও তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার হলেন মো. রবিন। তিনি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। এর আগে ওই ইউপি সদস্য মদ খেয়ে মসজিদে মুসল্লির ওপর হামলা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. হারুনুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করি।’ এ সময় ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত পান বলে জানান তিনি।

মো. হারুনুর রশিদ আরও বলেন, পরে ধর্ষিতা ওই নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসিতে) ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কারখানার উদ্দেশ্যে স্বামীর সঙ্গে বের হন ওই নারী শ্রমিক। তাঁরা কেশবপুর এলাকায় পৌঁছালে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রবিন ও তাঁর ৪৫ জন সহযোগী তাঁদের গতিরোধ করেন। এ সময় তাঁরা জোর করে নারী শ্রমিক ও তাঁর স্বামীকে ধরে ইউপি সদস্যের একটি ঘরে নিয়ে যান। পরে স্বামীকে মারধরের পাশাপাশি তাঁর টাকা, মোবাইল, অলংকার ছিনিয়ে নেয়া হয়। তাঁকে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি বেঁধে রেখে তাঁর সামনে স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে ওই নারীর অনুরোধে তাঁকে ফোন ফিরিয়ে দিলে ধর্ষিতা কৌশলে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯এ ফোন করে তাদের উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা চান।

খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুনুর রশিদ ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষিতা নারী ও তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করেন। তবে পুলিশ আসার আগেই ইউপি সদস্য ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান। ধর্ষিতা নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসিতে) ভর্তি করায় পুলিশ।

এ বিষয়ে সোনাইছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইউপি সদস্য রবিনের এ ঘটনা সত্যিই উদ্বেগের। তিনি আরও বলেন, ‘রবিন প্রায় সময় নেশা করে মাতলামি করে। এর আগেও সে মাতাল অবস্থায় মুসল্লির ওপর হামলাসহ নানা ধরনের অপকর্ম করেছে।’ বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ধর্ষিতা নারী ও তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রবিন পলাতক রয়েছে। এ বিষয়ে ধর্ষিতা নারীর স্বামী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে মেম্বার রবিন সহ অজ্ঞাত দুই জনকে আসামি করা হয়েছে।’ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য রবিনের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দিয়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য আজ থেকে ফের আবেদনের সুযোগ
পরবর্তী নিবন্ধটোল আদায়ের টেন্ডারে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ