স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন ‘হাজারী লেইন’

জাহেদুল আলম | শুক্রবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২১ at ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

“১৯৭১। পাক-বাহিনীর ক্রুর ছোবলে আক্রান্ত হলো এ শহর। জ্বললো আগুন। অত্যাচার। আর চললো গুলি। ৮ এপ্রিল। নৃশংস হত্যার এক পৈশাচিক প্রতিযোগিতা। এই ক্রুর পৈশাচিকতার শিকার হলো এ হাজারী লেইন। ভাঙলো দুর্জয় জনতার প্রতিরোধ।
কিন্তু ভাঙেনি দৃঢ় প্রত্যয় আর প্রতিজ্ঞা। শহীদের তাজা খুনে ভাসলো এই লেইন। শান্তিপ্রিয় মানুষের সুখের নীড়ে আগুন। হাজারী লেইন হলো ভস্মিভূত। ওরা সবাই জানতো ধ্বংস-নিশ্চিহ্ন; কিন্তু সৃষ্টি? সুদৃঢ় প্রতিজ্ঞায় মাতৃভূমে বিজয়ের রক্তিম পতাকা উড়ালো। আজ ৭৪। স্মরণ করি হৃদয়ের অকুন্ঠ শ্রদ্ধায়, সুচিন্তিত প্রতিজ্ঞায় ঐ দিন এবং শহীদের মুখাবয়বগুলো।”
১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত কাজল কান্তি দে সম্পাদিত ‘হাজারী লেইন ৭১-৭৪’ লিটল ম্যাগাজিনের উদ্বোধনী সংখ্যার সম্পাদকীয়ের অংশ বিশেষ উপর্যুক্ত কথাগুলো। প্রবীণ নাট্যজন সুজিত দাশের সৌজন্যে ‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যার একটি কপি এবং দ্বিতীয় সংখ্যার একটি ফটোকপি প্রাপ্তির সৌভাগ্য হয়। কিন্তু ১৯৭১ সালে হাজারী লেইনে কী ঘটেছিল? আর কেন ঘটেছিল? সেটা জানার জন্য আমরা শরণাপন্ন হতে পারি স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত প্রথম দিকের লিটল ম্যাগাজিন ‘হাজারী লেইন’ (দৈনিক আজাদী ২৪ অক্টোবর ২০০২ দ্রষ্টব্য) এর প্রথম সংখ্যার শেষ আর্টিক্যালের। আর্টিক্যালটি ছিলো দীপক জ্যোতি আইচ রচিত ‘হাজারী লেইনের ইতিকথা’ শিরোনামে। সেখানে উল্লেখ আছে- “১৯৭১ এর ১লা মার্চের পর হাজারী লেইনের সবাই অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে হাজারী লেইনে আবুল ফজল, গুরুপদ দে ও ফয়েজুর রহমান হাজারী লেইন সংগ্রাম কমিটির যথাক্রমে সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনকে পরিচালিত করেন। বিনোদা ভবন ছিলো সংগ্রামের নির্দেশ কেন্দ্র। এই হাজারী লেইনকে কয়েকবার করে পুড়ে দেয়। ৮ই এপ্রিল চরমভাবে আগুন জ্বেলে ভস্মিভূত করে হাজারী লেইনকে। টুন্টু সেন-পিতা বিপিন চন্দ্র সেন, রনজিত কুমার দাশ- পিতা রবীন্দ্র দাশ, নবদ্বীপ বনিক, কুঞ্জহরি ধর ব্যক্তিরা এই লেইনের অন্যতম শহীদ।”
১৯৭০ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এক নম্বর সেক্টরের জোনাল কমান্ডার মির্জা আবু মনসুর বিভিন্ন সময়ের লেখালেখি ও বক্তব্যের মাধ্যমে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাওয়ার পর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম.আর. সিদ্দিকী ও জহুর আহমদ চৌধুরী বিভিন্ন জনকে দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন করে দেন। মির্জা আবু মনসুরের উপর দায়িত্ব পড়ে কালুরঘাটস্থ বেতারকেন্দ্র পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত রাখার এবং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রচার করার। তরুণ ছাত্রনেতা শওকত হাফিজ খান রুশ্নির সহযোগিতায় পরদিন ২৬শে মার্চ ১৯৭১ ‘দৈনিক সমাচার’ এ ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন’ ব্যানার হোডিং সংবাদ প্রকাশিত হয়। দৈনিক সমাচারের সম্পাদক সেকান্দার হায়াত মজুমদার ও বার্তা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী এই সংবাদ প্রকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। পরদিনই দৈনিক সমাচার অফিস বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। মির্জা আবু মনসুর সূত্রে আরো জানা যায়, হাজারী লেইনের বিনোদা ভবন ছিলো আন্দোলন সংগ্রামের আঁতুড়ঘর। ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হাজারী লেইন ধ্বংস ও ভস্মিভূত করে।
এই প্রসঙ্গে কথা হয় ১৯৬৭ সাল থেকে ‘দৈনিক সমাচারে’ সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার ও সংগঠক এবং ‘হাজারী লেইন’ এর সম্পাদক কাজল কান্তি দে এর সাথে। তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পরদিন থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত হাজারী লেইন থেকে আমরা ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি সান্ধ্যকালীন বুলেটিন প্রকাশ করতাম। ‘বাংলাদেশ’ এর সম্পাদক ছিলেন শওকত হাফিজ খান রুশ্নি, প্রকাশক এবিএম নিজামুল হক, পৃষ্ঠপোষক আবু মোহাম্মদ হাশেম আর আমি ছিলাম পরিচালনা সম্পাদক। হাজারী লেইনের মোহাম্মদী প্রেস থেকে ক্রাউন সাইজে আমরা বুলেটিনটি প্রকাশ করতাম। হাজারী লেইনের বিনোদা ভবন ছিলো স্বাধীনতা সংগ্রামের নির্দেশ কেন্দ্র। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সবাই বিনোদা ভবন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিক নির্দেশনা দিতেন। সেই সময়ের সব তুখোড় ছাত্র নেতারা বিনোদা ভবনকে কেন্দ্র করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। হাজারী লেইন থেকেই ২৫শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ছাপানোর কাজ শুরু হয়। পরদিন ২৬শে মার্চ দৈনিক সমাচার এর প্রধান শিরোনাম ছিলো ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন’। ২৭শে মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দৈনিক সমাচার কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করে দেয়।”
‘হাজারী লেইন’ সম্পাদক কাজল কান্তি দে আরো বলেন, “হাজারী লেইন থেকে প্রকাশিত দৈনিক সমাচার পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে অনেক প্রথিতযশা কবি, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতার সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয়। হাজারী লেইন থেকেই আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। যুদ্ধ শেষে দৈনিক ‘দেশবাংলা’ পত্রিকায় যোগদান করি। তখন হাজারী লেইনের দৈনিক সমাচারের সেই পোড়া ভিটায় মালিকের অনুমতি নিয়ে একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে থাকতাম। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বের, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কার হাজারী লেইনের একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে একটি প্রকাশনা করার তাগিদ অনুভব করি। সেই অনুপ্রেরণায় ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশ করি ‘হাজারী লেইন’। ১৯৭১ সালে হাজারী লেইনের দগ্ধক্ষত ৮ এপ্রিলকেই ‘হাজারী লেইন’ এর ডেট লাইন করি।”
‘হাজারী লেইন’ এর প্রথম সংখ্যায় প্রবন্ধ লেখেন রনজিৎ চক্রবর্তী ‘সঙ্গীত দ্রোপদীর শাড়ি ও বুদ্ধদেব বসু’ শিরোনামে, খালেদা হানুম লেখেন ‘কবিগুরুর জীবন ভাবনা প্রসঙ্গে’ শিরোনামে, দিলীপ মালাকার লেখেন ‘সমাচার বিষয়ক স্মৃতি তর্পন’ শিরোনামে এবং শওকত হাফিজ খান রুশ্নি লেখেন ‘চলুন, নিহত বিবেকের শোকসভা করি’ শিরোনামে।
‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যায় তেইশ জন কবির কবিতা প্রকাশ করা হয়। কবিগণ যথাক্রমে ড. এনামুল হক, আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ, আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, দিবাকর বড়ুয়া, দিলওয়ার হোসেন, আলতাফ হোসেন, আবুল মোমেন, কাজী ইনামুল হক দানু, ময়ুখ চৌধুরী. অরুন কান্তি দাশ, দীপক জ্যোতি আইচ, সৈয়দ সহিদুল হক, মোহাম্মদ আশরাফ, বিপ্লব বিজয় বিশ্বাস, কাজী রফিক, শিশির দত্ত, ফারুক আহমেদ, সন্তোষ ধর, কঙ্কন নন্দী, ফরিদা বেগম মেরী, জাকারিয়া মামুন, পরেশ গুপ্ত ও বিষ্ণু দে।
প্রথম সংখ্যায় গল্প ছাপা হয় সুচরিত চৌধুরী, মানস পাল, প্রদীপ দস্তিদার ও সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরীর। ‘স্মৃতিচারণ’ শিরোনামে শেফালিকা দত্ত, ‘একটি নাম এক-দুই-তিন’ শিরোনামে সুভাষ দাশগুপ্ত (রূপম) এবং ‘হাজারী লেইনের ইতিকথা’ শিরোনামে দীপক জ্যোতি আইচ এর আর্টিক্যাল প্রকাশ করা হয় হাজারী লেইন এর প্রথম সংখ্যার একেবারে শেষে।
কাজল কান্তি দে সম্পাদিত ‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যায় সম্পাদকীয়ের পরপরই ছাপা হয়েছে তখন সদ্য প্রয়াত বুদ্ধদেব বসু (৩০ নভেম্বর ১৯০৮-১৮ মার্চ ১৯৭৪) এর ‘মৃত্যু-জল্পনা’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ। প্রবন্ধটি প্রকাশ সম্পর্কে সম্পাদক লিখেছেন, “শ্রদ্ধেয় কথাশিল্পী, প্রবন্ধকার, আধুনিক কবিতার জনক বুদ্ধদেব বসু’র অকাল মৃত্যুতে আমাদের হৃদয়ের নিগূঢ় শ্রদ্ধার পুষ্পার্ঘ তাঁর প্রতি নিবেদন করছি এবং তাঁর লিখিত প্রবন্ধটি পুনঃপ্রকাশ করছি আমরা।”
‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন শিল্পী চন্দ্র শেখর দে। প্রকাশনায় প্রদীপ দস্তিদার এবং গৌরাঙ্গ দে। সার্বিক পরিকল্পনায় ও অঙ্গসজ্জায় অরুন কান্তি দাশ ও দীপক জ্যোতি আইচ, আলোকচিত্রশিল্পী অরুন কান্তি রক্ষিত, ব্লক নির্মাণে বলাকা স্ট্যাম্প হাউস, মুদ্রিত হয়েছে মোহাম্মদী প্রেস থেকে। বিজ্ঞাপন প্রদান করেছে রাঙামাটির তবলছড়ি বাজারের মেসার্স মঞ্জুশ্রী স্টোর্স, চাক্তাই চট্টগ্রামের বর্ণালী সাপ্লাই এজেন্সী এবং ৩ নং হাজারী লেইন এর সৃজনী আর্ট এন্ড গ্লাস সিন্ডিকেট।
‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যার মূল্য কত, তা কোথাও মুদ্রিত নেই। এমনকি মুদ্রিত নেই প্রকাশকাল। তবে সম্পাদকীয় ও শেষ লেখাটির শেষে প্রদত্ত পাদটীকা থেকে বুঝতে পারা যায়, ‘হাজারী লেইন’ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে ৮ এপ্রিল ১৯৭৪।
‘হাজারী লেইন দ্বিতীয় সংখ্যারও প্রকাশকাল উল্লেখ নেই। তবে, দ্বিতীয় সংখ্যায় মূল্য লেখা হয়েছে ‘শুভেচ্ছা মূল্য দু’টাকা’। সম্পাদক যথারীতি কাজল কান্তি দে, যুগ্ম সম্পাদক বিপ্লব বিজয় বিশ্বাস, প্রকাশনায় গৌরাঙ্গ দে ও প্রদীপ দস্তিদার, ব্যবস্থাপনায় সমীর বরণ পাল, উপদেশনায় ছিদ্দিক আহমেদ ও মিলন মজুমদার, পৃষ্ঠপোষক মীর শাহাবুদ্দিন মাহমুদ এবং প্রচ্ছদ করেছেন শাহ আলম পিন্টু।
হাজারী লেইন দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘সুধীন্দ্রনাথ দত্ত’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছেন আবু সায়ীদ আইয়ুব, ‘সাহিত্য শিল্পী ড. আহমদ শরীফ’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছেন জহরলাল খাস্তগীর, ‘সঙ্গীতে আধ্যাত্মিকতা’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছেন সুচরিত চৌধুরী, ‘সৌর শক্তি ও উহার ব্যবহার’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছেন ড. মো: নুরুল ইসলাম এবং ‘নিস্ফল’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখেছেন তাপস শর্ম্মা।
দ্বিতীয় সংখ্যায় কবিতা লিখেছেন যথাক্রমে শামসুর রাহমান, আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, দিলওয়ার হোসেন, আবুল কালাম মনজুর মোর্শেদ, রনজিৎ কুমার চক্রবর্তী, আসাদ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুন, মহাদেব সাহা, মুহাম্মদ নুরুল হুদা, খালেদা হানুম, সুব্রত বড়ুয়া, সিদ্দিক আহমেদ, মোহিনী মোহন গাঙ্গুলী, সন্তোষ ধর, অরুন দাশ, মৃনাল চক্রবর্তী, শিশির দত্ত, দীপক জ্যোতি আইচ, বিশ্বনাথ চৌধুরী (জহরলাল), দীপক চৌধুরী (দীপু), শেফালিকা দত্ত ও উৎপল শর্ম্মা (লীলা)।
কাজল কান্তি দে সম্পাদিত ‘হাজারী লেইন’ তৃতীয় সংখ্যা পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছিলো। তবে, এই নিবন্ধকারের পক্ষে তৃতীয় সংখ্যা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় সংখ্যারও ফটোকপি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
স্বাধীনতা লাভের পরপরই ‘হাজারী লেইন’এর পূর্বে চট্টগ্রাম থেকে আরো কয়েকটি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে নাম আসবে ১৯৭২ সালের ২১শে ফ্রেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত সুদীপ দেওয়ানজী সম্পাদিত একুশের সংকলন ‘শেষ থেকে শুরু’। এরপর ১৯৭২ সালে আরো দুইটি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। ম্যাগাজিন দুইটি হচ্ছে শাহ আলম পিন্টু সম্পাদিত ‘যুগান্তর’ এবং সুবীব মাহমুদ সম্পাদিত ‘উদভাস’। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয় কবি শিশির দত্ত সম্পাদিত ‘সম্পাদক’। প্রায় কাছাকাছি সময়ে প্রকাশিত হয় আনন্দ মোহন রক্ষিত সম্পাদিত ‘শোনিত গালিচা পাতা জনপদ’। চট্টগ্রাম লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক কবি কমলেশ দাশগুপ্ত উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
১৯৭৪ সালের ৮ এপ্রিল প্রকাশিত কাজল কান্তি দে সম্পাদিত ‘হাজারী লেইন ৭১-৭৪’ এ প্রচ্ছদের পরবর্তী পৃষ্ঠায় চট্টগ্রামের তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামান বড়লস্কর এর একটি শুভেচ্ছা বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই শুভেচ্ছা বার্তাটি আজকের পাঠকদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে এই লেখা সমাপ্ত করছি- “হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে ধ্বংস আর মৃত্যুর শিকার হয়েছিলো হাজারী লেইন। অত্যাচার-নিপীড়ন এখানকার জীবনের স্পন্দন স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষ অজেয়। তাই আজ এখানকার তরুণরা অলিখিত ইতিহাসের অমর শিলালিপি রচনা করছেন। এ মহতী প্রয়াসের প্রতি আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি; কামনা করছি এ প্রয়াসের আনন্দ সুন্দর সার্থকতা।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোদবৃষ্টি
পরবর্তী নিবন্ধ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা