স্বস্তির দিনেও তিনজনের সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ৪ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ব্যাট করাটা কতটা কঠিন সেটা বিশ্বের যেকোন ক্রিকেটারই জানে। আর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অজানা থাকারতো কথা নয়। তবে এবারের বাংলাদেশ যেন অতীতের সব স্মৃতিকে মুছে দিল। বলা যায় নিউজিল্যান্ডের উইকেটকে বাংলাদেশের উইকেট বানিয়ে দিল ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে ম্যাচের তৃতীয় দিনে অধিনায়ক মোমিনুল হক এবং উইকেট রক্ষক লিটন দাশ মিলে বে ওভালের উইকেটে রানের ফোয়ারা ছুটালেন। আর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের পরিণত করলেন একেবারে সাধারণ মানের বোলিংয়ে।
সাউদি-বোল্টদের বলের আগুন যেন নিভে গেল মোমিনুল-লিটনের ব্যাটের আঘাতে। ফলে টেস্টের টানা দ্বিতীয় দিন আধিপত্য বজায় রাখল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে দুই সেশনের পর গতকাল তৃতীয় দিনে টানা তিন সেশন ব্যাট করেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। আর তাতেই নিউজিল্যান্ডের স্কোরকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মোমিনুল হক এবং লিটন দাসের ব্যাটিং বীরত্বে বাংলাদেশ লিড নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৫৬ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০১ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। আর তাতেই কিউইদের চেয়ে টাইগাররা এগিয়ে আছে ৭৩ রানে। তবে স্বস্তির দিনেও জয়, মোমিনুল ও লিটন সেঞ্চুরির কাছিকাছি গিয়ে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে।
আগের দিন ২ উইকেটে ১৭৫ রান তুলে দিন শেষ করেছিল টাইগাররা। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং অধিনায়ক মোমিনুল হক অপরাজিত ছিলেন যথাক্রমে ৭০ ও ৮ রানে। তৃতীয় দিনের তৃতীয় ওভারেই ফিরলেন মাহমুদুল হাসান জয়। আগের দিনের স্কোরের সাথে আর মাত্র ৮ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। ২২৮ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৮ রান করে ফিরেন জয়। এরপর উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। মোমিনুলের সঙ্গে বেশ ধীর গতিতেই এগোচ্ছিলেন মুশফিক। এরই মধ্যে ৮০ তম ওভারে ফিরতে পারতেন মোমিনুল। ওয়াগনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন মোমিনুল। তবে ওয়াগনারের বলটি ছিল নো বল। ফলে সে যাত্রায় রক্ষা পায় মোমিনুল। এ সময় তার রান ছিল ৯। জীবন পাওয়া মোমিনুল এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মুশফিক পারেননি তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে। ১২ রান করে ফিরেন মুশফিক। বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন দলের সবচাইতে নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান। তবে সে ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে বেশ ভালই টেনে নিয়ে যান মোমিনুল এবং লিটন।
পঞ্চম উইকেটে এই দুই ব্যাটসম্যান ৩১৭ বলে ১৫৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন। এতেই বাংলাদেশ পায় ৩৩ রানের লিড। দারুণ ব্যাট করতে থাকা মোমিনুল আরো একটি সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তেমনটি যখন ভাবছিল টাইগার শিবির ঠিক তখনই ধৈর্য্য হারালেন তিনি। শতক থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে ট্রেন্ট বোল্টের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন টাইগার অধিনায়ক। রিভিউ নিয়েছিলেন মোমিনুল কিন্তু তাতেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আসেনি কোনো পরিবর্তন। ৩৭০ মিনিটে ক্রিজে থাকা মোমিনুল ২৪৪ বলে ১২টি চারের সাহায্যে ৮৮ রান করে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি মোমিনুলের ১৫তম অর্ধশতক। মোমিনুল হক ফিরলে আর বেশি সময় টিকতে পারেননি লিটন দাসও। ২৪৭ মিনিটে ক্রিজে থাকা লিটন ১৭৭ বলে ১০টি চারের সাহায্যে ৮৬ রান করে ফিরলেন। তিনিও হয়েছেন বোল্টের শিকার। এটি লিটনের ১১তম অর্ধশতক। দুজনই মিস করলেন সেঞ্চুরি। দিনের শেষ সেশনে ৩৭ ওভারে ৯৪ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়ে মোমিনুল এবং লিটনের উইকেট। ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি ৩৫ বলে ১১ আর মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৮ বলে ২০ রান করে তৃতীয় দিন শেষ করেছেন অপরাজিত থেকে। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের আউট হওয়া চার উইকেটের মধ্যে প্রথমটি নিয়েছেন নিল ওয়াগনার। এরপরের তিনটি উইকেটই নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। ম্যাচের চতুর্থ দিনে বাকি চারটি উইকেট হারিয়ে কতদূর যেতে পারে বাংলাদেশ সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাখ টাকার বেশি জমলেই ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধক্যাম্পাস কটেজে চবি ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ