সুনির্মল বসু : কবি ও শিশুসাহিত্যিক

| শনিবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

সুনির্মল বসু (১৯০২১৯৫৭)। কবি ও শিশুসাহিত্যিক। যে কজন সাহিত্য সাধক আজীবন বাংলা শিশুসাাহিত্যের সেবায় ব্রতী ছিলেন তাঁদের মধ্যে কবি সুনির্মল বসু অন্যতম।

বাংলার শিশুকিশোরদের মধ্যে শিক্ষা ও আনন্দ বিতরণের ব্রত নিয়ে তিনি আজীবন সাহিত্য চর্চা করেন। তাঁর রচিত অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক ও জীবনীগ্রন্থ বাংলা শিশুসাহিত্যে স্থায়ী সম্পদ হয়ে রয়েছে। ‘সবার আমি ছাত্র’ তাঁর একটি বিখ্যাত ছড়া। ১৯০২ সালের ২০ জুলাই বিহারের গিরিডি নামক স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মালখানগর। সাহিত্যিক ও সাংবাদিক গিরিশচন্দ্র বসু ছিলেন তাঁর পিতামহ এবং প্রখ্যাত বিপ্লবী ও সাহিত্যিক মনোরঞ্জন গুহঠাকুরতা ছিলেন তাঁর মাতামহ। সুনির্মল পাটনার গিরিডি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২০) পাস করে কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে ভর্তি হন, কিন্তু গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২১) যোগ দিতে গিয়ে কলেজ ত্যাগ করেন। কিশোর বয়স থেকে কবিতা লেখা ও ছবি আঁকার প্রতি সুনির্মলের ঝোঁক ছিল। তিনি কিছুদিন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আর্ট কলেজে ছবি আঁকা শেখেন। প্রবাসী পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, রূপকথা, ভ্রমণকাহিনী, কৌতুক নাটক ইত্যাদি মাধ্যমে শিশুকিশোর উপযোগী সাহিত্য রচনা করেন।

তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো : হাওয়ার দোলা (১৯২৭), ছানাবড়া, বেড়ে মজা, হৈ চৈ, হুলুস্থূল, কথাশেখা, পাততাড়ি, ছন্দের টুংটাং (১৯৩০), আনন্দ নাড়ু, শহুরে মামা, কিপটে ঠাকুরদা (১৯৩৩), টুনটুনির গান, গুজবের জন্ম, বীর শিকারী, লালন ফকিরের ভিটে, পাতাবাহার, ইন্তিবিন্তির আসর (১৯৫০), পাহাড়ে জঙ্গলে ইত্যাদি। ছোটদের চয়নিকা ও ছোটদের গল্প সঞ্চয়ন তাঁর সম্পাদিত দুটি উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থ। তাঁর রচিত আত্মজীবনী জীবন খাতার কয়েক পাতার প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। সুনির্মল সমকালের একমাত্র শিশুতোষ পাক্ষিক পত্রিকা কিশোর এশিয়ার পরিচালক ছিলেন। তিনি দিল্লীতে অনুষ্ঠিত প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের শিশুসাহিত্য শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ভুবনেশ্বরী’ পদক লাভ করেন। ১৯৫৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনারীর যাপিত জীবন
পরবর্তী নিবন্ধভাষা আন্দোলনের নানান বাঁকে চট্টগ্রাম