সিইউএফএল বর্জ্যের পানি পানে ৮ মহিষের মৃত্যু

ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস, ল্যাব কর্মকর্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ মে, ২০২১ at ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারাস্থ চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এর বর্জ্যের বিষাক্ত পানি পান করে ৮ মহিষের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বারশত ইউনিয়নের রাঙ্গাদিয়া মাঝের চর এলাকায় খালের বিষাক্ত পানি পানে তাদের মৃত্যু হয়। মহিষগুলোর আনুমানিক মূল্য ৭ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানার বিষাক্ত পানি স্থানীয়দের অবগত না করে খালে ছাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর গতকাল সিইউএফএল ল্যাব কর্মকর্তা রূপ শংকর চৌধুরী, স্থানীয় চেয়ারম্যান এম.এ.কাইয়ূম শাহসহ সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার রাতে সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পানি ড্রেন দিয়ে ছেড়ে দেয়। এতে খালের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হয়। আর গতকাল সকালে স্থানীয়দের মহিষগুলো সিইউএফএল এলাকার মাঝের চর খালের এ বিষাক্ত পানি পান করে ৮টি মহিষ অসুস্থ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এরমধ্যে রয়েছে- স্থানীয় দুধকুমড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ এরফান আলীর ৩টি, আবদুল মালেকের ৩টি ও আনোয়ার হোসেনের ২টিসহ ৮টি মহিষ। এরপর ঘটনাস্থল পরির্দশন করে একদল প্রতিনিধি। তারা পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষা করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিইউএফএলের নির্গত গ্যাসের বিষাক্ত পানি গোবাদিয়া খালে ছেড়ে দেয়। খালের আশপাশের এলাকা স্থানীয়দের গরু-ছাগল ও মহিষের বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। গত বুধবার রাতে কারখানার পানির ছাড়ার সময় সে নিয়ম মানেনি কর্তৃপক্ষ । এতে স্থানীয়দের গবাদি মহিষ মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ এরফান আলীর দাবি- সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের অবগত না করে বিষাক্ত পানি-বর্জ্য ছাড়ার কারণে তার দুই লক্ষাধিক টাকার অধিক মূল্যের ৩টি মহিষের (গাভী) মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের বারশত ইউনিয়নের পারকি দুধকুমড়া ও গোবাদিয়াসহ এ এলাকায় স্থানীয়দের শত শত গরু-মহিষ মাঝের চর এলাকায় পালন পালন হয়। এখন আমরা এগুলো নিয়ে আতঙ্কে আছি। গতকাল দুপুর পর্যন্ত আটটি মহিষ মারা গেছে। দেখছি আর কোথাও মরে আছে কিনা। এর আগে মহিষের মৃত্যু হলেও সেই ক্ষতিপূরণ দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় চেয়ারম্যান এম.এ কাইয়ূম শাহ্‌ বলেন, মাইকিং না করায় প্রায় এলাকার গরু মহিষের মৃত্যু হচ্ছে। ঘটনাটি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। এবিষয়ে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহিম বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সিইউএফএলের বর্জ্য পানির কারণে এলাকার কয়েকটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। সিইউএফএলের কারণে গরু-মহিষ মারা গেলে কর্তৃপক্ষ অব্যশই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সিইউএফএল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মফিদুল আলম জানান, সিইউএফএল বর্জ্য পানি পান করে মহিষের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় অধ্যাপকের স্বীকৃতি পেলেন আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন
পরবর্তী নিবন্ধসন্দ্বীপবাসী পেলেন অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ