সাড়ম্বরে মহালয়া উদযাপন

বাঙালির রয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা : জেলা প্রশাসক

| সোমবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

শুভ মহালয়ার মধ্যদিয়ে গতকাল থেকে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে আজ। বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। ভোর থেকেই শুরু মন্দিরে মণ্ডপে চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী দুর্গার আবাহন। চলে দেবীর চক্ষুদানের প্রস্তুতি। আগামী ১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হবে।
মহালয়াকে বলা হয় দুর্গাপূজার সূচনা লগ্ন, দেবীপক্ষের উদ্বোধন। এই দিনটি চট্টগ্রামে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে। মেধস আশ্রমে মহালয়া উদযাপন করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলা শাখা। বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা নগরীর জেএম সেন হলে আয়োজন করে মহালয়ার অনুষ্ঠান।
জেএম সেন হলের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে শুভ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাঙালি কখনো ধর্মান্ধতায় বিশ্বাস করে না। বাঙালির রয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা। সব ধর্মান্ধতাকে পেছনে ফেলে বহুকাল ধরে এ দেশের মানুষ সকল ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ কালীপদ ভট্টাচার্য্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল। পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জন দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টী উত্তম কুমার শর্মা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাবেক সভাপতি রাখাল দাশগুপ্ত, সাধন ধর, অ্যাড. চন্দন কুমার তালুকদার, সহ-সভাপতি অধ্যাপক অর্পন ব্যানার্জী, সুমন দেবনাথ, লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, লায়ন দীলিপ ঘোষ, অরূপ রতন চক্রবর্তী, প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক মঠ মন্দিরে চেক প্রদান করা হয়। রাতে শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও শম্ভু দাশের পরিচালনায় গীতিনৃত্য নাট্য অনুষ্ঠিত হয়।
মেধস আশ্রমে মহালয়া উদযাপন করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলা শাখা। সকাল ৮টায় নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় হতে বাস ও মাইক্রোবাসের শোভাযাত্রা সহকারে পূজার্থীদের নিয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বোয়ালখালী করলডেঙ্গা মেধস আশ্রমের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল হতে মহালয়ার নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। চণ্ডীপূজা, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান শেষে পরিষদ নেতৃবৃন্দ মেধস আশ্রম প্রাঙ্গণে মহালয়া ভিত্তিক আলোচনা সভা করেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি শ্যামল কুমার পালিতের সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রবীর কুমার পালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- শ্রীমৎ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম কুমার শর্ম্মা, বুলবুল মহারাজ ও পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব। সভায় বক্তারা বলেন- শারদীয় দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। শান্তিপূর্ণ পারস্পরিক সহঅবস্থানের মাধ্যমে সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে পূজার্থীর সাথে সকলকে দায়িত্ব ভূমিকা পালন করতে হবে। পরিষদ নেতৃবৃন্দ পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে তিলতর্পণ শেষে ফেরার পথে নৌকা ডুবির মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে ‘শুভ মহালয়া’ উপলক্ষে পটিয়ার মুজাফরাবাদ সার্বজনীন কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন মাঙ্গলিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল- চণ্ডীপাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। দক্ষিণ জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি সন্তোষ রঞ্জন দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিঃ ভবশংকর ধর ও সহ-অর্থ সম্পাদক রাজীব সেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অরূপ রতন চক্রবর্তী। প্রধান অতিথি ছিলেন পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুল মামুন, পটিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদার, পরিষদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেব। প্রধান বক্তা ছিলেন ধর্মীয় বক্তা প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রুবেল দেব।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ভূজপুর থানা শাখার উদ্যোগে শুভ মহালয়া ফটিকছড়ি ভূজপুর কাজিরহাটস্থ ভূজপুর কেন্দ্রীয় সার্বজনীন শ্রীশ্রী হরি, দুর্গা, কালী ও গীতা মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ভূজপর থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পন্ডিত শ্রী লিংকন চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্মানিত মহিলা এম.পি খাদিজাতুল আনোয়ার (সনি)। অতিথি হিসেবে ছিলেন উদ্বোধক উত্তম কুমার শর্মা, মহান অতিথি বুলবুল কান্তি দে, আলোকিত অতিথি বিজয় কৃষ্ণ বৈষ্ণব, মো. হেলাল উদ্দিন ফারুকী, প্রধান বক্তা এড. উত্তম কুমার মহাজন, প্রমুখ।

সম্মানিত অতিথি মাস্টার রতন কান্তি চৌধুরী, সংবর্ধিত অতিথি সুজিত চক্রবর্তী, মাস্টার আশীষ চক্রবর্তী, সুমন কুমার বণিক, ডা. বরুণ কুমার আচার্য বলাই, প্রভাস কান্তি দে, রুপক কুমার দে, বিশেষ অতিথি লহ্মীবিন্দু ধর, এড. তরুণ কিশোর দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবুল কান্তি দেব, রণজিত কুমার পাল, তাপস চন্দ্র বাবু, আশীষ কান্তি দে, দেব দুলাল দেব বাপ্পী, বাবলু বিশ্বাস, অনিল সেন, মাস্টার তপন কুমার পালিত, পন্ডিত দুলাল কান্তি আচার্য্য, স্বাগত বক্তব্য রাখেন রনজিত কুমার শীল। আলোকিত অতিথি ছিলেন আবু জাফর মাহমুদ, আলহাজ্ব ইকবাল হোসেন চৌধুরী, মো. জানে আলম, জয়নাল আবেদীন, শাহাদাৎ হোসেন সাজু, শাহজাহান চৌধুরী শিপন, অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন এড. জনি কান্তি দে ও প্রভাষক রুপন দাশ, উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সঞ্জয় ধর ও সদস্য সচিব সুজন দে প্রমূখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক ও ফুটপাত থেকে ৫০ দোকানের বর্ধিত অংশ উচ্ছেদ
পরবর্তী নিবন্ধবাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে গেল মেয়ে