সামাজিক গণমাধ্যম কবিতার নতুন ভূমি

আহমেদ মুনির | শুক্রবার , ৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

কলকাতার ‘দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক সাগরময় ঘোষের ‘সম্পাদকের বৈঠকে’ বইটি সুযোগ পেলেই পড়তে শুরু করি যে কোনো পাতা থেকে। আমার বারবার পড়া হাতেগোনা কয়েকটি বইয়ের মধ্যে এটিও রয়েছে। সেই বই থেকে একটি ঘটনার বিবরণ তুলে দিয়ে আজকে কথাটুকু শুরু করি।

ঘটনাটি ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। যে-লেখায় সাহিত্যিক মূল্য নেই সে-লেখা তাঁর হাত দিয়ে প্রবাসীতে প্রকাশ করা ছিল অসম্ভব বা দুঃসাধ্য। তা সেই অন্য ধাতুতে গড়া, স্পষ্টবাদী সম্পাদক একবার কাশী গিয়ে গঙ্গাস্নানে ডুবতে বসেছিলেন। কাশীর মণিকর্ণিকার ঘাটে ডুবন্ত রামানন্দকে বাঁচিয়েছিল সেখানকারই স্থানীয় এক তরুণ। বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী সেই তরুণকে সেদিন কিছু প্রতিদান দিতে চেয়েছিলেন রামানন্দ, কিন্তু কিছুই নিতে রাজি হয়নি সে। তাই বিদায় নেবার সময় নোটবুকের পাতায় নিজের নাম, প্রবাসী পত্রিকার ঠিকানা যুবকটির হাতে তুলে দিয়ে রামানন্দ বলেছিলেন, ‘আমার ঠিকানা দেওয়া রইল। ভবিষ্যতে যদি কোনোদিন তোমার কোনো প্রয়োজনে আসতে পারি তবে নিজেকে কৃতার্থ মনে করব।’

এই ঘটনার পর ছয় মাস পার হয়ে গেছে। একদিন দুপুরে প্রবাসী অফিসের দোতলার ঘরে বসে রামানন্দববাবু গভীর মনোনিবেশ সহকারে কড়া সম্পাদকীয় মন্তব্য লিখছেন। এমন সময় একটি বলিষ্ঠদেহ যুবক দরজার চৌকাঠের ওপারে দাঁড়িয়ে তাঁর মনোযোগ আকর্ষণ করল। কাশীর মণিকর্ণিকার ঘটের সেই ছেলেটি। উৎফুল্ল রামানন্দ তাকে দেখে ভাবলেন, নিশ্চয় চাকরির দরখাস্ত নিয়ে এসেছে, বা একটা রেকমেন্ডেশন চায়। তিনি যুবকটির উপকার করতে পারবেন ভেবে খুশি হলেন। যুবকটি এক সময় সন্তর্পণে বুক পকেট থেকে ভাঁজ করা একটি কাগজ বের করে রামানন্দের হাতে দিলেন। কাগজটি খুলেই চমকে উঠলেন প্রবাসী সম্পাদক। সেখানে অপটু হস্তাক্ষরে লেখা একটি কবিতা, ‘এক নৌকায় তুমি আমি।’ গম্ভীর মুখে সেই কবিতা পড়তে পড়তে ফ্যাকাশে হয়ে উঠলেন রামানন্দ। শেষে যুবকটিকে বললেন, এ-কবিতা আমি ছাপতে পারব না। বরং যে-গঙ্গা থেকে তুমি আমাকে উদ্ধার করেছিলে সেই গঙ্গায় ফেলে দিয়ে এসো।’

রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মতো আপসহীন সাহিত্য সম্পাদক পরবর্তীকালে ভারতবর্ষ বা স্বাধীন বাংলাদেশে ক’জন ছিলেন তা এ-লেখার আলোচ্য বিষয় নয়। বরং গত শতাব্দীর ফেলে আসা দশকগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, একটা সময় পর্যন্ত এ-দেশের সংবাদপত্রের সাহিত্যপাতা ও সাময়িকীগুলো জমজমাট ছিল। বিশেষ দিনে পাঠক অপেক্ষায় থাকত সেসবের। সমকালের সিকান্দার আবু জাফর, দৈনিক বাংলার আহসান হাবীব, সংবাদের আবুল হাসনাত, সন্ধানীর বেলাল চৌধুরী, রোববারের রফিক আজাদ লেখক বা কবি পরিচয়ের বাইরে সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে সারা দেশে একনামে পরিচিত ছিলেন। ওই সব সাময়িকীতে লেখা ছাপানো তরুণ কবি-লেখকদের জন্য স্বপ্নের বিষয় ছিল। কিন্তু সংবাদপত্রের সাহিত্য সাময়িকীগুলোর সেই রমরমা আর নেই। এখন দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রের সাহিত্য পাতায় ছাপা আধেয় বা কনটেন্ট নিয়ে পাঠক মহলে বড় একটা আলোচনা হয় না।

ছাপা সংবাদপত্র বিশ্বজুড়েই ধুকছে। আর সংবাদপত্রের সাহিত্যের পাতা পাঠক হারাচ্ছে-এ কথা নতুন নয়। নতুন কথা হলো, অনলাইন সাহিত্য-সাময়িকী যা প্রতি সপ্তাহে বা প্রতিদিন চাইলেই নতুন লেখা সংযোজন করতে পারে, অর্থাৎ আপডেট হওয়ার ক্ষমতা রাখে, তাও পাঠকের আগ্রহের বাইরেই থাকছে। কেন এমনটা ঘটছে? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে সম্প্রতি শূন্য দশকের কবি ও সাহিত্য সম্পাদক সোহেল হাসান গালিবের একটা উক্তি চোখে পড়ল। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলা ভাষায় বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে ফেসবুক। দৈনিকের সাহিত্যপাতার গুরুত্ব নামিয়ে এনেছে শোচনীয় পর্যায়ে। এতটাই শোচনীয় যে, দৈনিকে কবিতা ছাপা হলে সেসব আজকাল কেউ পড়ে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ফেসবুকে তা শেয়ার করা হয়। কাগুজে লিটল ম্যাগাজিন এখন ব্যথিত প্রেমের ধূসর স্মৃতিমাত্র।’

গালিবের কথায় কেউ একমত না হতে পারেন, কিন্তু অতি কল্পনা বলে একে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। মানুষের মনোজগতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষত ফেসবুক, টুইটার আর ইনস্টাগ্রাম এতই প্রভাববিস্তারী হয়ে উঠেছে যে বিশ্বের নামকরা শতবর্ষী সংবাদপত্রগুলোও একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সাহিত্যের প্লাটফর্ম হিসেবে এই নতুন গণমাধ্যমগুলোও(নিও মিডিয়া) সদর্পে হাজির হচ্ছে পাঠকের সামনে। এমনিতেই উপন্যাসের তুলনায় কবিতার পাঠক সংখ্যা ক্রমশ নিম্নমুখী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা কবিদের বইয়ের মুদ্রণ সংখ্যা যেখানে হাজারের ঘরে ওঠা-নামা করে, হঠাৎ করে সেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া কবিদের মুদ্রণ সংখ্যা মিলিয়নও ছাড়িয়ে যাওয়ার খবর আসছে। এ-যেন বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে কবিতার ফিরে আসা। নতুন এই কবিতা কেবলই কি সাহিত্যের বেনোজল? নাকি অন্যকিছু?

পশ্চিমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষত ইনস্টাগ্রামে জনপ্রিয়তা পাওয়া কবিদের নিয়ে এখন মাতামাতি চলছে। চটজলদি ভাষায় এদের নামকরণ করা হয়েছে ‘ইনস্টা পোয়েট’ হিসেবে। বই প্রকাশের পর নাক উঁচু সাহিত্য সাময়িকীগুলো এদের গুরুত্ব দিতেও বাধ্য হচ্ছে। বলা হচ্ছে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন এই ‘ইনস্টা পোয়েটরা’। এদের বেশিরভাগই এখন জীবিকা হিসেবে কবিতা লেখাকে বেছে নেওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন। ভেবে দেখুন, বেঁচে থাকার জন্য রবীন্দ্রনাথকে জমিদারি দেখতে হয়েছে, নজরুলকে লিখতে হয়েছে ধর্মীয় সংগীত, অধ্যাপনার চাকরি হারানো জীবননান্দকে জনে-জনে কাজের জন্য ধরনা দিয়ে বেড়াতে হয়েছে। এ-দশা কেবল বাংলাভাষার কবিদের নয়, বরং হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ কবিকে কবিদের এমন দারিদ্র্য সঙ্গী করে বাঁচতে হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে টম নামে পরিচিত টিএস ইলিয়ট ছিলেন লয়েডস ব্যাংকের কেরানি। ব্যাংকের সেলারে বসে ব্যালেন্স শিট মেলানোর ফাঁকে তিনি যে ‘প্রুফ্রকের প্রেমগীতি’র মতো কালজয়ী কবিতা রচনা করেছেন, তা তাঁর সহকর্মীরা টেরও পাননি। তবু অন্তর্বাস ও পায়জামা কেনার জন্য সেই ইলিয়টকেই আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা নিতে হয়েছে বলে শোনা যায়। শুধু কি ইলিয়ট, চার্লস বুকোওস্কির মতো কবিকেও হোটেলে বাসন মাজার মতো কাজ করতে হয়েছে জীবন চালিয়ে নিতে।

এমন ইতিহাস সামনে থাকা সত্ত্বেও কানাডার কবি রুপি কৌর, যিনি ইনস্টা পোয়েটদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়, তিনি কবিতা লিখেই নিজের জীবিকা চালাবেন বলে সদর্পে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর সে-কথা শুনে অনেকে পাগলের প্রলাপ ভেবেছিল। তবে তাদের ভুল ভাঙতেও সময় লাগেনি। রুপি কৌরের বই ‘মিল্ক অ্যান্ড হানি’ বহু বছর ধরে বেস্ট সেলারের তালিকায় থাকা হোমারের অডিসিকে পেছনে ফেলেছে। বিশ্বের ৪০টি দেশে সাড়ে তিন মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে তার বই। তিন মিলিয়ন ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ার নিয়ে রুপি কৌর নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলারের তালিকায় উঠেছেন। ফোর্বসের ত্রিশের কম বয়সী ৩০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায়ও তার নাম উঠেছে।

তবে সমালোচনার অবকাশ থেকেই যায় এরপরও। নিবিষ্ট পাঠকেরা বলবেন, রুপির অর্জন সাহিত্য থেকে আসেনি, এসেছে সামাজিক মাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা থেকে। কিন্তু এ-কথাও যুক্তি দিয়ে অনেকে বলতে পারেন কবিতা লিখেই তো জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। আসুন দেখে নেওয়া যাক রুপি কৌরের কবিতার এক ঝলক।

রুপি কৌরের ছোটছোট সহজবোধ্য কবিতার সঙ্গে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের স্ট্যাটাসের মিল খুঁজে পাবেন অনেকে। আরও পরিষ্কার করে বললে, অনেকটা যেন স্মরণীয় উক্তির মতো তার কবিতাগুলো।
‘আমি জল
জীবনের জন্য
বড় বেশি কোমল
আর একে ডুবিয়ে
দেওয়ার জন্যও।’

প্রেম নিয়ে তাঁর আরেকটি কবিতা এমন
‘তুমি আমার প্রথম প্রেম ছিলে না হয়তো
কিন্তু তোমার প্রেম বাকি সব প্রেমকে
করে তুলেছিল অপ্রাসঙ্গিক।’

কেবল রুপি কৌর নন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তোলা কবিদের অনেকে হলিউডের তারকাদেরও প্রিয় কবি হয়ে উঠেছেন। এঁদেরই একজন চেলো ওয়েড। তিনি লিখছেন, বাইবেলের বাণীর মতো তীক্ষ্ম, সংবেদী ও সঞ্চারী উক্তি। চেলোর একটি কবিতা এমন,

ভালোবাসা চাও, ভালোবাসা হও।
আলো চাও, আলো হও।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘এন প্লাস ওয়ান’ পত্রিকার সম্পাদক শাদ হারবাখ এ-নিয়ে এক নিবন্ধ লিখেছিলেন নিজের সম্পাদিত পত্রিকায়। সেখানে তিনি বলেছেন, এত দিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্যে দু’টি প্রধান ধারা ছিল, এর একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক, যেখানে সাহিত্য পড়ানো হয়, অপর একটি হলো নিউ ইয়র্কের প্রকাশনা শিল্পকেন্দ্রিক সাহিত্যের ধারা। এর বাইরে এখন তৃতীয় একটি ধারার জন্ম হয়েছে, এটি হলো অতি দ্রুত গতিতে বদলাতে থাকা অন্তর্জালের সামাজিকমাধ্যম নির্ভর সাহিত্যের ধারা।
তবে কবিতা বলতে এতদিন আমরা যা বুঝেছি, তার সঙ্গে কতটুকু এসব সামাজিক মাধ্যমের কবিতার সঙ্গে মেলে তা নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েই গেছে। এসব তর্ককে অবশ্য পাত্তাই দিতে চান না রুপি কৌর আর চেলো ওয়েডরা। সাহিত্যের বাজারে তারা যে নতুন ব্র্যান্ড এ-কথা রাখঢাক না রেখেই স্বীকার করছেন। নিজেদের সাহিত্যিক পরিচয়ের পাশাপাশি এন্ট্রাপ্রোনউর হিসেবে তুলে ধরছেন। বিশ্ববিখ্যাত প্রসাধন ব্র্যান্ড গুচ্চির বিজ্ঞাপনে আর নাইকির জুতাও চেলো ওয়েডের কবিতা স্থান পেয়েছে।
যারা এটুকু পড়ে চোখ সরিয়ে নেবেন ভাবছেন এ-কারণে যে, কবিতার জাত গেল, বাণিজ্যে কবিতার কী কাজ? তাদের বলে মনে করিয়ে দিই শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় কবিতার লাইন, ‘মনে করো জুতো হাঁটছে, পা রয়েছে স্থির’ একটি বিখ্যাত জুতার কোম্পানির বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হয়েছে।
আর এ-কথাও মানতে হবে, ইনস্টা কবিদের রমরমায় এখন বুকশপগুলোর সামনের দিকে স্থান পাচ্ছে কবিতাবিষয়ক বই। জনপ্রিয় কবিদের পাশাপাশি বিক্রি বেড়েছে সিরিয়াস কবিদের বইও।
তবে আসল সমালোচনার জায়গা বোধ হয় এই যে, কবিতা শেষ পর্যন্ত ব্যবসার জিনিস নয়। ভোক্তারুচি যদি এর গতিপথ ঠিক করে দেয় তবে শেষ পর্যন্ত তা আর কবিতা থাকে না। ব্রিটিশ কবি রেবেকা ওয়াটস এক নিবন্ধে বিদ্রুপ করে লিখেছেন, ‘পাঠকের মৃত্যু হয়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা মাফিক কনটেন্ট দীর্ঘজীবী হোক।’
তবু সাহিত্যের অনুরাগী অনেক পাঠকই এখনো বিশ্বাস করেন, সামাজিক মাধ্যমে যতই অকবিতার বাড়বাড়ন্ত হোক, মহৎ কবিতা ঠিকই পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছে যাবে। খুব বেশি দূর যেতে হবে না এ-দেশেই তার উদাহরণ রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেই নিজেদের প্রকাশ করেও মহৎ কবিতা লিখে চলেছেন তাঁরা। ‘কালো কৌতুক’, ‘পেন্টাকল’ ‘ম্যাঙ্মি’ খ্যাত কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ তাঁদেরই একজন। যাঁর কবিতা দৈনিক বা সাপ্তাহিকের সাহিত্যপাতায় ছাপা হয়নি তেমন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে ইমতিয়াজের অনেক কবিতা এখন পাঠকের মুখে-মুখে। তাঁর কবিতার লাইন স্থান পেয়েছে দেয়াল লেখনেও।
যুগের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে কবিতার ভাষা বদলাচ্ছে। প্রকাশের মাধ্যম বদলাচ্ছে। কিন্তু তার প্রতি মানুষের ভালোবাসাও টিকে আছে এটাই বড় কথা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফিরিঙ্গীবাজার
পরবর্তী নিবন্ধইউসিটিসিতে এডমিশন ফেয়ারের উদ্বোধন