সরকারি অফিস ও বাড়িতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১০ মার্চ, ২০২১ at ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এই দিনে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে গণঐক্য আন্দোলনের নেতা এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, খুব দ্রুত পটপরিবর্তন হচ্ছে। দেশকে বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে শিগগির ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানই কার্যত এখন ঢাকার সরকার। এদিন পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে একটি তারবার্তা পাঠান। তারবার্তায় তিনি বলেন, উদ্ভূত সামপ্রতিক ঘটনাবলীতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। আমরা আজ বিরাট সংকটের মুখোমুখি। দেশের ভবিষ্যত আজ অনিশ্চিত। টাঙ্গাইলে বিন্দুবাসিনী হাইস্কুল মাঠে জনসভায় ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বঙ্গবন্ধু ঘোষিত স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ৭ কোটি বাঙালির নেতা। নেতার নির্দেশ পালন করুন। স্বাধীন বাংলার দাবিতে অবিচল সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারের সঙ্গে সব ধরনের অসহযোগিতা অব্যাহত রাখে। বঙ্গবন্ধু আহূত অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে শরীক হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ও প্রশাসনের সচিবসহ সারা বাংলায় সরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের কর্মচারী অফিস বর্জন করেন। ইতিহাসের এই দিনে সচিবালয় ও মুখ্য সচিবের বাসভবন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ সকল সরকারি ও আধা-সরকারি ভবন ও বাড়ির শীর্ষে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ানো হয়।
ন্যাপ (ওয়ালী) পূর্ববাংলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহমদ, পাঞ্জাব আওয়ামী লীগ সভাপতি এম খুরশীদ, কাউন্সিল মুসলিম প্রধান মমতাজ দৌলতখানার বিশেষ দূত পীর সাইফুদ্দিন ও ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধিকে উলফ এই দিনে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। সংগ্রামী জনতা সেনাবাহিনীর রসদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর স্বাভাবিক সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। সিলেটে রেশন নেওয়ার সময় সেনাবাহিনীর একটি কনভয়কে বাধা দেওয়া হয়। যশোরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে। রাতে সামরিক কর্তৃপক্ষ ১১৪ নম্বর সামরিক আদেশ জারি করে নির্দেশ দেয়, কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলে অথবা সশস্ত্র বাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণ বা সেনাবাহিনীর গতিবিধিতে অন্তরায় সৃষ্টি করলে তাদের কার্যকলাপ আক্রমণাত্মক কাজের শামিল বলে গণ্য হবে, যা সংশ্লিষ্ট সামরিক বিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে সংক্রমণের হার ৬.৬৭ শতাংশ
পরবর্তী নিবন্ধতারাও করবে জয়