সময় শেষ, প্রতিবেদন দিতে পারেনি কমিটি

জলাবদ্ধতার কারণ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ জুলাই, ২০২২ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

নগরের দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানের বিপরীতে অনুষ্ঠান ক্লাব থেকে মুরাদপুর হয়ে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক পর্যন্ত সিডিএ এভিনিউ সংলগ্ন চশমা খালের কিছু কিছু অংশে রাস্তার পাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় এ রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়। অপর পাশে অর্থাৎ রাস্তার বিপরীতে জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়নি। তাছাড়া খালটির কিছু অংশ সরু হয়ে আছে। এসব কারণে গত মাসের ভারী বর্ষণে দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুর অংশে খালের পানি রাস্তা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে।
নগরের জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কয়েকদিন আগে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্য জানতে পারে। অবশ্য নির্ধারিত সময় শেষ হলেও কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। গত ২২ জুন এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সাত দিনের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে কমিটির সদস্যরা পানি প্রবাহে খালে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে সময় বেঁধে দেয়া হয়। অথচ ১১ দিন পার হলেও গতকাল পর্যন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রতিবেদন প্রস্তুত না হলেও বিভিন্ন খাল পরিদর্শন করেছেন কমিটির সদস্যরা। সর্বশেষ মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, চান্দগাঁও ও মোহরাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত করেছেন। এর আগে হালিশহর, আগ্রাবাদ ও বাকলিয়া এলাকার জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত করে কমিটি। তবে সবকিছু একত্রে করে দুয়েকদিনের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে সিটি মেয়রের কাছে হস্তান্তর করবেন। প্রতিবেদনে জলাবদ্ধতার কারণগুলো দূরীকরণে সুপারিশও করা হবে। গত ২৮ জুন আজাদীতে হালিশহর, আগ্রাবাদ ও বাকলিয়া জোনে জলাবদ্ধতার কারণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বাকি এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, জাকির হোসেন রোড, আল ফালাহ গলি, সিঅ্যান্ডবি এলাকার পানি অপসারণে আট ফুট
প্রশস্ত একটি নালা আছে। এটা দিয়ে দ্রুত নামতে না পারায় ওভার ফ্লু হয় দুই নম্বর গেট এলাকায়। তুলাতলী খালের ব্রিজের নিচে কাজ শেষ হওয়ার পরও মাটি, টিন এবং অন্যান্য সরাঞ্জাম অপসারণ করা হয়নি। দুই নম্বর গেট থেকে মেহমান ক্লাব পর্যন্ত ড্রেন প্রশস্ত করা হয়নি। অনেক জায়গায় মাটি ভরাট হয়ে আছে।
নয়া মির্জা ও বামনশাহী খাল যেখানে এক হয়েছে সেখানে বামনশাহী অংশে পুরনো রেল ব্রিজের নিচে পাকা ভাঙা অংশ রয়ে গেছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানি প্রবাহ। ত্রিপুরা খালের রেল ব্রিজ থেকে বামনশাহী খালের রেল ব্রিজ পর্যন্ত জায়গায় রেললাইনের পূর্ব পাশে নালা বন্ধ রয়েছে। বামনশাহী খালের মোস্তাফা পোলট্রি এবং মোস্তাফা ট্রেডিং, অদূরপাড়া বানিয়ারপুল অংশে দুটি বাঁধ আছে। একইভাবে হাজীরপুল থেকে পূর্ব উত্তরা খালে ১৩০ মিটার অংশে কাজ চলমান আছে। এ কারণে বামনশাহীর ৩০০ মিটার অংশের সাথে পানি যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। এখানে উত্তরা খাল দিয়েও পানি যাওয়ার পথ বন্ধ। এছাড়া পানি প্রবাহ বন্ধ আছে হাজীর পুল থেকে নিচের অংশে। উত্তরা, ত্রিপুরা এবং বামনশাহী খালের জন্য চান্দগাঁও, পশ্চিম ষোলশহর, শমসেরপাড়াসহ মোহরাসহ আশেপাশের এলাকায় জলাবদ্ধ হয়।
প্রসঙ্গত, একাধিক প্রকল্পের কাজ চলমান থাকার পরও নগরে জলাবদ্ধতার প্রকোপ না কমায় গত ২২ জুন বৈঠকে বসে চসিক ও সিডিএ। এতে জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হচ্ছেন চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী।
কমিটির সদস্য কাউন্সিলর মোবারক আলী আজাদীকে বলেন, বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। খালগুলো দেখেছি। কোথায় কী সমস্যা আছে তা আমরা প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবউ পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়া স্বামীর আজব যুক্তি
পরবর্তী নিবন্ধদেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চাই : শেখ হাসিনা