সম্মিলিতভাবে কাজ করলে চট্টগ্রাম দ্রুত এগিয়ে যাবে

| শুক্রবার , ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রামের উন্নয়নে নাগরিক সমাজের সহায়তা চেয়েছেন। ২৪ জানুয়ারি দৈসিক আজাদীতে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত মঙ্গলবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে সিটি লেভেল কোঅর্ডিনেশন কমিটির ৩য় সভায় মেয়র নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ সহায়তা চেয়েছেন। মেয়র বলেন, চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে নাগরিক সমাজের সহায়তা পেলে আমার চেষ্টা সাফল্যমণ্ডিত হবে। চট্টগ্রামে অবৈধভাবে ফুটপাথ দখল এখন বড় সমস্যা। আমরা নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান করছি তবে উদ্ধার হওয়া স্থান দখলে রাখার মতো লোকবল না থাকায় আবারও উদ্ধারকৃত জায়গা পুনর্দখল হয়ে যাচ্ছে। আগ্রাবাদে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু দুই মাস পর আবারও আগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নিউ মার্কেট, এক্সেস রোডে বাজার বসে গেছে। আমি পুলিশের সাথে সভা করেছি। ফুটপাত ও খাল পুনরুদ্ধার এবং ব্যাটারি রিকশা বন্ধে আমরা আবারও বড় অভিযানে যাব। স্বাভাবিকভাবেই এগুলো ঠেকাতে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী মিছিলমিটিং করবে। তবে যদি গণমাধ্যম প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করে এবং নাগরিক সমাজ আমাকে সহায়তা দেয় তাহলে অবশ্যই সফল হব। সভায় দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, বর্ষাকালে নগরী থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাওয়ার প্রাকৃতিক ড্রেনেজ সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা ঠেকাতে হলে দ্রুত সময়ে চট্টগ্রামের পানি অপসারিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

আসলে চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন বা গেটওয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চট্টগ্রামের ওপর দেশকে নির্ভর করতে হয়। সেই চট্টগ্রামকে আরো গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বন্দরকে আপগ্রেড করতে হবে। তাহলে ৬০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা যাবে।

মনে রাখা জরুরি যে, একবিংশ শতাব্দীর উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ নগরীকে পেছনে রাখলে চলবে না। উন্নয়নের মহাসড়কে তীব্র গতিবেগে চলতে হবে। নানা সভাসমাবেশে কিংবা গোলটেবিল আলোচনায় চট্টগ্রামের নাগরিক সমস্যাগুলো অতি দ্রুত দূরীভূত করে উন্নয়নে গতিবেগ সঞ্চারের প্রণোদনাই উচ্চারিত হয়েছে বারবার। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করবার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমাদের মাননীয় মন্ত্রীনেতারা নানা সময়ে অঙ্গীকার করেন, প্রতিশ্রুতি দেন যে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন হয় না। আমরা মনে করি, চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার।

নানা মহল থেকে অভিযোগ আসে যে, ‘অনেক কিছুই শুরু করা হয় সুন্দরভাবে, কিন্তু সেসব শেষ করা হয় না। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা ও চৌকস বাস্তবায়ন প্রচেষ্টার কথাও বলা হয়। সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের তাগিদও দেওয়া হয়। জলাবদ্ধতা, যানজট, নদীখাল দখল, পাহাড় কর্তন ইত্যাদি সমস্যার পেছনে অসাধু চক্র ও অবৈধ যানবাহনের তথ্যও আলোচনায় বের হয়ে আসে। মোটের উপর নাগরিক সমস্যা, সমন্বয়হীনতা ইত্যাদির পেছনে কার্যকর প্রায়সকল কারণই উন্মোচিত হয় এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ তাগিদও দেওয়া হয়। তবু চট্টগ্রামের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আমরা প্রত্যক্ষ করি না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সমন্বয়হীনতা, সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করা, অনেক কাজ শুরু করে যথাসময়ে শেষ করতে না পারা ইত্যাদি নানা সীমাবদ্ধতায় বিদ্যমান নাগরিক সমস্যা লাঘব হচ্ছে না। ফলে উন্নয়নের মহাসড়কে চট্টগ্রামের গতিবেগও বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বরং জলাবদ্ধতা ও যানজটে থমকে থাকছে মহানগরী। উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রামে বিশেষ বরাদ্দ ও নানা প্রকল্প দেওয়া হলেও চট্টগ্রামের জনদুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না।

মোট কথা, চট্টগ্রামের উন্নয়ন সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের সাথে কথা বলতে হবে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে হবে। খুঁজে নিতে হবে সমাধানের পথ। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে চট্টগ্রাম দ্রুত এগিয়ে যাবে। দেশেরও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। দেশজুড়ে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। এই উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি তদারকি করেন। খোঁজখবর নেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নেও সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। চট্টগ্রামকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ সরকারের উপরের পর্যায় থেকে যেভাবে অনুভব করা হচ্ছে, বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটুকসেটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে