আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে দেশে ‘গৃহযুদ্ধ’ বেঁধে যাবে কিনা, এই প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এমনটা হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ইজতেমার তারিখ ঠিক করতে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আলেমদের দুই পক্ষকে নিয়ে সভায় এই কথাগুলো উঠে আসে। এই সভায় বসার আগেই নিশ্চিত হয়ে যায়, সন্ধ্যায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটের সময় জানিয়ে তফসিল ঘোষণা করতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে আসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমার সুযোগ রাখার কথা জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
এই নির্বাচন নিয়ে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি ও তার মিত্ররা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৩ সালের মতোই টানা অবরোধ কর্মসূচি ডেকে যাচ্ছে। দাবি পূরণ না হলে ভোটে না আসা, এমনকি ভোট হতে না দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনও এমন একটি বিরুদ্ধ পরিবেশে হয়েছিল। সে সময় ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে ৫ জানুয়ারি ভোট হয়েছিল। তার আগেই অবশ্য দেড়শরও বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গিয়েছিলেন। তখনও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অগ্রাহ্য করেছিল, এখনও একই অবস্থানে আছে তারা।
দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির এই বিভেদে দেশে ‘গৃহযুদ্ধ’ বেধে যাবে কিনা–এমন প্রশ্ন রাখেন একজন আলেম। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাই নেই। সংখ্যায় যদি ১ আর ৯৯ হয় তাহলে গৃহযুদ্ধ লাগে? গৃহযুদ্ধ লাগে ৫০–৫০ হলে। গৃহযুদ্ধ লাগার কোনো আশঙ্কা নেই। তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি ‘জ্বালাও–পোড়াওয়ের চেষ্টা করলে’ তা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ এবং তারা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে, আমরা সেইভাবেই আমরা আমাদের পুলিশ বাহিনীকে তৈরি করেছি। পুলিশ বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে গিয়ে একটা সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবে।
তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি লাগাতার হরতাল কর্মসূচি দিতে পারে জানিয়ে একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে তিনি বলেন, আমরা যেটা বলতে চাই আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দল সবাই মনে করে যে জনগণের ম্যান্ডেলটাই হল আসল। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কিংবা ভাঙচুরের মাধ্যমে মানুষকে কষ্ট দেওয়া যায়, একটা ঘটনা ঘটানো যায়, কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। ‘সহিংসতা করে’ বিরোধী দল কোনো কিছুই অর্জন করতে পারবে না বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশের অদূতে নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, পুলিশ চরম ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে।












