শ্বশুর বাড়ির উঠানে মাটির নিচে স্ত্রীর লাশ

মহেশখালী প্রতিনিধি | রবিবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:১২ পূর্বাহ্ণ

মহেশখালীতে গৃহবধূ আফরোজা বেগমের (২০) নিখোঁজের ৬ দিন পর তার লাশ মিলল শ্বশুরবাড়ির উঠানে মাটির নিচে। গত শুক্রবার রাত ১১টায় প্লাস্টিক মোড়ানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহত আফরোজার পারিবারিক সূত্র জানায়, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামের হাসান বশিরের পুত্র বদরখালী কলেজের খণ্ডকালীন প্রভাষক রাকিব হাসান বাপ্পীর সাথে হোয়ানক
পুঁইছড়ার মো. ইসহাকের মেয়ে আফরোজার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এটি ছিল বাপ্পির চতুর্থ বিয়ে এবং আফরোজার দ্বিতীয় বিয়ে।
আফরোজার বড় ভাই মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, বাপ্পি মাদকাসক্ত ও উগ্র মেজাজি। তিনি কারণে-অকারণে আমার বোনকে নির্যাতন করেন। এ ব্যাপারে একাধিকবার সালিস হয়েছে। সর্বশেষ কঙবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। কিছুদিন পূর্বে স্বামী আর নির্যাতন না করার শর্তে তাকে আদালত থেকে নিয়ে যান।
১২ অক্টোবর বিকালে শাশুড়ি রোকেয়া হাসান আফরোজার বাবাকে ফোন করে জানান, আফরোজা নিখোঁজ হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে আফরোজার বাপের বাড়ির লোকজন তৎপর হন এবং খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ পাননি। অপরদিকে আফরোজার নিখোঁজের সাথে সাথে পলাতক হয়ে যান স্বামী। এ বিষয়ে গত বুধবার মহেশখালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন আফরোজার বাবা মো. ইসহাক।
ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই হাসান ও তার মা রোকেয়া গৃহবধূ আফরোজার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতনে বেশ কয়েকবার তিনি গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় আফরোজা বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলার পর দুই পক্ষের মীমাংসার ভিত্তিতে সংসার শুরু করেন তারা। কিন্তু বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকে আবারও আফরোজা আকতারকে নির্যাতন করেন স্বামী ও শ্বাশুড়ি।
আফরোজার বড় ভাই মিজান দাবি করেন, হাসানের প্রথম স্ত্রীর বাড়ি রাজবাড়ি। ওই সংসারে একটি মেয়ে রয়েছে। কলহের কারণে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়। কিন্তু হাসান আফরোজাকে বিয়ে করার পর প্রথম স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। প্রথম স্ত্রীর ইন্ধনেই আফরোজাকে নির্যাতন করেন বলে দাবি মিজানের।

আফরোজার বাবা ইসহাক জানান, ১২ অক্টোবর নিখোঁজের পর থেকে পুলিশ নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে উদ্ধার করতে পারিনি। প্রতিবেশীদের কাছে খবর নিয়ে জানতে পারি, এক রাতে আমার মেয়েকে তার স্বামী খুব মেরেছে। ওই রাতে প্রতিবেশী চাচার কাছ থেকে কোদাল নিয়ে সকালে ফেরত দেওয়ার খবরও পাই।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল হাই গত রাতে জানান, গৃহবধূ আফরোজার নিখোঁজের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে গতকাল রাতে স্বামী বাপ্পির বাড়ির উঠানে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় মহাসড়কের পাশে যুবকের রগ কাটা লাশ
পরবর্তী নিবন্ধনতুন কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০