শিশুসাহিত্য আমার অহংকার

আবু মুসা চৌধুরী | শুক্রবার , ১৪ অক্টোবর, ২০২২ at ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ

সাহিত্যে অনেক রকম ফ্রাকশান। কথাসাহিত্য, লোকসাহিত্য, গণসাহিত্য, গদ্যসাহিত্য-এরকম আরো আরো। তদ্রূপ শিশুসাহিত্য। কিন্তু শিশুসাহিত্য ব্যাপারটা কী? এখাানে দু’টো বিষয়। যেমন- শিশুদের নিয়ে শিশুদ্বারা রচিত লেখা, যে লেখার উদ্দিষ্ট বা টার্গেট গ্রুপ শিশু। নচেৎ প্রাপ্তবয়স্কের শিশুতোষ রচনা।
ব্যাপারটা ধোঁয়াটে এবং অমীমাংসিত। একটু ব্যাখ্যা করা যাক। যেমন : ছোটদের পাতায় ‘ সোনামণিদের কলম থেকে’ শীর্ষক আগডুম বাগডুম ধরনের বিস্তর সাহিত্যে অনেক রকম ফ্রাকশান। কথাসাহিত্য, লোকসাহিত্য, গণসাহিত্য, গদ্যসাহিত্য-এরকম আরো আরো। তদ্রূপ শিশুসাহিত্য। কিন্তু শিশুসাহিত্য ব্যাপারটা কী? এখানে দু’টো বিষয়। যেমন- শিশুদের নিয়ে শিশুদ্বারা রচিত লেখা, যে লেখার উদ্দিষ্ট বা টার্গেট গ্রুপ শিশু। নচেৎ প্রাপ্তবয়স্কের শিশুতোষ রচনা।
ব্যাপারটা ধোঁয়াটে এবং অমীমাংসিত। একটু ব্যাখ্যা করা যাক। যেমন : ছোটদের পাতায় ‘ সোনামণিদের কলম থেকে’ শীর্ষক আগডুম বাগডুম ধরনের বিস্তর লেখা হরদম ছাপা হয়। যেহেতু তা শিশুদের নিয়ে শিশুদেরই রচনা তা শিশুসাহিত্য বলা যায়। আর যদি ধরি- ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি–আর্নেস্ট হোমিংওয়ের নোবেল জয়ী সুপরিচিত ক্লাসিক। আখ্যান হলো বুড়ো স্যান্টিয়াগো নামে এক বুড়ো আর এক বালকের প্রকৃতির সঙ্গে অসম লড়াই। যেখানে ওরা হেরে যায়। আমরা ওই রচনায় পাই সেই ওই দুই অসমবয়সী মানুষের সম্পর্কের ইন্টারঅ্যাকশন ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি তে। কোনো শরীরী প্রসঙ্গ নেই। ভাষার কারিকুরি নেই, জটিলতা নেই- নিতান্তই সাদামাটা গল্প।এখন যদিবলি ওটা শিশুসাহিত্য, তাহলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়? অথবা দুই বালক-বালিকার মায়াবী ও মরোমী বিষয় পথের পাচাঁলী। রবীন্দ্রনাথের পোস্টমাস্টার, ছুটি, আপদ, অতিথি, ডাকঘর এগুলোরও মুখ্য কুশীলব ছোটগল্পেরও মুখ্য কুশীলব শিশু। ওগুলো কি শিশুসাহিত্য?
না। শিশুসাহিত্য বা Juvenile Literature গ্লোবাল সাহিত্যের একটি মাধ্যম। গালিভারস ট্রাভলস, অ্যালিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড, ট্রেজার আইল্যান্ড মূলত বাচ্চাদের জন্যে লেখা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ওগুলো বয়স- নিরপেক্ষ আমজনতার সাহিত্যে রূপান্তরিত হয়েছে। অ্যানা ফাঙ্কের ডায়েরি কি সকল বয়সীর জন্যে নয়? সেরকম অবন ঠাকুরের বুড়ো অ্যাংলা, সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল। এই বিষয়গুলো আমাদের ভাবা দরকার। বুদ্ধদেব বসুর দু’টো বিখ্যাত বই আছে প্রবন্ধের। একটি- কালের পুতুল, অন্যটি সাহিত্যচর্চা। তিনি ওখানে আলোচনায় কথিত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়কে সুধীন্দ্র নাথ দত্ত, বিষ্ণু দে, জীবনানন্দের সঙ্গে একই কাতারে স্থান দিয়েছিলেন। অবন ঠাকুরের শিশুসাহিত্যের কাব্যময়, গদ্য নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তো, ব্যাপারটা দাঁড়ায় শিশুসাহিত্য, শিশুসাহিত্য অভিধায় রচিত হলেও তা কালক্রমে রচনার উৎকর্ষে, মানে ধারে- ভারে সাহিত্য হয়ে ওঠে। শিশুসাহিত্য আমাদের অহংকার। আমাদের গৌরব। শিশুসাহিত্যের জয় হোক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে
পরবর্তী নিবন্ধহোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে বিভ্রান্তি