শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থী রক্তাক্ত

ছাত্রদের বিক্ষোভ, অভিযুক্ত শিক্ষক গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৩ মে, ২০২২ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

বোয়ালখালীতে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে মঈনুল হক নামে ১০ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রতিবাদে তার সহপাঠীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় স্কুলে অবস্থান করা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমানকেও অবরুদ্ধের চেষ্টা চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার গোমদন্ডী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষক মো. সাইফ হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের ভোকেশনালের খন্ডকালীন শিক্ষক। খবর পেয়ে বোয়ালখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন।

এ ঘটনায় সন্ধ্যায় শিশু নির্যাতন আইনে আহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. আবদুল বারেক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে থানা প্রথমে মামলা নিতে না চাইলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্কুল গেইটের সামনে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় স্কুলের ভেতরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান অবস্থান করছিলেন। তিনি সরকারি সফরে স্কুলটি পরিদর্শন করছিলেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা তাকেও অবরুদ্ধের চেষ্টা চালায়। থানা পুলিশ এ ঘটনায় মামলা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিকেল ৫টার দিকে ছাত্ররা অবরোধ প্রত্যাহার করে। এ সময় সড়কের দু’পাশে যানজট লেগে যায়।

মঈনুলের সহপাঠীরা জানায়, ক্লাস চলাকালীন সময় শিক্ষার্থী মঈনুল সহপাঠীদের সাথে হেসে উঠে। বিষয়টি শিক্ষক সাইফের নজরে এলে তিনি মঈনুলকে ডেকে ক্লাসের মধ্যে বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। একটি বেত ভেঙ্গে গেলে শিক্ষক আরো একটি বেত নিয়ে এসে মারতে থাকেন। শিক্ষকের বেতের আঘাতে শিক্ষার্থী মঈনুল গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার সহপাঠীরা তাকে ধরে প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী মঈনুলকে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন এবং বিষয়টি দেখবেন বলেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থী মঈনুলের ভাই মো. মোমিনুল হক এসে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সুমন কান্তির সহায়তায় আহত মঈনুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

আহত শিক্ষার্থী মঈনুল হকের পিতা আবদুল বারেক বলেন, আমি স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে আছি। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত। আমার ছেলে চোর না ডাকাত এভাবে শিক্ষক মেরে রক্তাক্ত করল! আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে রেখেছেন।

আহত শিক্ষার্থীর ভাই মোমিনুল হক বলেন, মামলা করতে থানায় গেলে পুলিশ মামলা না করে এটা মিমাংসা করে নিতে বলেন। রাজি না হওয়ায় তার অসুস্থ বাবা ও ছাত্রদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন পুলিশ। প্রতিবাদে ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বিচার চেয়ে সড়ক আবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে সন্ধ্যায় থানা পুলিশ মামলা নিয়ে শিক্ষককে আটক করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈনুল আবেদিন নাজিম বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর আঘাতে নিষেধ করা আছে। নিষেধ না মেনে ওই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে এর আগেই আমরা অব্যহতি দিয়েছি। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখালে দেয়া বাঁধ মে মাসেও কেন অপসারণ হয়নি, প্রশ্ন মেয়রের
পরবর্তী নিবন্ধভারত থেকে এসেছে এক লাখ টন গম