শহীদ মাহমুদ জঙ্গির সাক্ষাৎকার

ভূমিকা ও সাক্ষাৎকারগ্রহীতা : নাজমুস সাকিব রহমান | সোমবার , ২২ মার্চ, ২০২১ at ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ

শহীদ মাহমুদ জঙ্গী দেশের প্রবীণ গীতিকবি। লিরিক লিখেন। বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের অনেক পরিচিত গান তার লেখা। রেনেসাঁর ‘হৃদয় কাদামাটির মূর্তি নয়’, ‘আজ যে শিশু’, সোলসের ‘চায়ের কাপে’, ‘ভালবাসি ওই সবুজের মেলা’, সামিনা চৌধুরীর ‘সময় যেন কাটে না’-এরকম অনেক গান তার লেখা। সত্যি বলতে ‘সোলস’, ‘রেনেসাঁ’ এবং ‘এলআরবি’; চট্টগ্রামের এই তিনটি ব্যান্ড স্থায়িত্ব পেয়েছে তাঁর লিরিকে। বাংলাদেশে খুব কম গীতিকবি এ ধরনের প্রভাব রেখেছেন। শহীদ মাহমুদ জঙ্গি এক জীবনে অনেক ধরনের লিরিক লিখেছেন। তার লেখায় উঠে এসেছে নাগরিক চিত্রকল্প। প্রেম-ভালবাসার অনুভূতি, একাকীত্ব। আর অবশ্যই দেশপ্রেম। কখনো কখনো তিনি প্রশ্নও উসকে দিয়েছেন। দেখতে চেয়েছেন ভিন্ন আয়নায়।

এলআরবির প্রথম গান ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’
‘আমি যখন ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’ লিখি, ভাবতেই পারিনি এই গানটি দিয়ে এলআরবি পরিচিতি পাবে। বাচ্চু এটা প্রথমে সোলসের হয়ে টিভিতে গেয়েছিল। কিছুদিন পর সোলস ছেড়ে যাওয়ার সময় গানটি সে চেয়ে নেয়। পরে গানটি দিয়ে এলআরবির যাত্রা শুরু হয়। বাচ্চু এদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতকে আমজনতার কাছে নিয়ে গিয়েছিল।

ফিরে দেখা ‘সোলস’
৮০’র দশকে সোলসের জন্য প্রেমের গানের পাশাপাশি কিছু বক্তব্য নির্ভর কাজ করেছি। তাদের দ্বিতীয় অ্যালবামের জন্য লিখেছিলাম-‘মুক্তো মানিক পাবার আশায়, আমরা দিচ্ছি পাড়ি/ পদ্মা-মেঘনা-কর্ণফুলী, শঙ্খ ধলেশ্বরী’। এই গানটির সুর করেছিলেন তপন চৌধুরী। একই সময়ে আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও গান হয়েছে।

প্রিয় লেখক
খুশবন্ত সিং।

প্রিয় গীতিকবি
সিনিয়রদের মধ্যে মীরা দেব বর্মণ। এছাড়া কাওসার আহমদ চৌধুরীর লেখা ভাল লাগে। উনার অনেক গান সত্যিকার অর্থেই আধুনিক।

বারবার দেখা সিনেমা
বারবার যে সিনেমা দেখেছি, তা হচ্ছে ‘গডফাদার’। মারিয়ো পুজোর উপন্যাস নিয়ে অসাধারণ সিনেমা। এখানে ক্যামেরার কাজ, মিউজিক ও অভিনয়- প্রতিটি ক্ষেত্রে দারুণ মুন্িসয়ানা রয়েছে। একসময়ের আমেরিকার বড় একটি অধ্যায় এই সিনেমায় দেখতে পাই।

রেনেসাঁ ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান
রেনেসাঁ কথার ব্যাপারে অত্যন্ত চুজি। তাই তাদের গানগুলো আলাদাভাবে চেনা যায়। তারা ভালো গানকে জনপ্রিয় করেছে। ১৯৭৮ সালের দিকে চট্টগ্রামের ভাষায় আমার লেখা ‘আঁরো দেশত যাইয়ু্‌ তুঁই’ বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের প্রথম মৌলিক আঞ্চলিক গান। রেনেসাঁ সচেতনভাবেই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে ব্যান্ড সংগীতের মধ্যে নিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে ‘ননাইয়া ননাইয়া হতা হই’ নামে একটা গান লিখেছিলাম।

লিরিক তৈরি
লেখার বিষয়বস্তু প্রথমে মাথায় আসে। তারপর একটি একটি বাক্য সাজাই। ক্লিশে হয়ে যাওয়া শব্দ সচেতনভাবে বাদ দিই। অনেক সময় রেকর্ডিংয়ের আগ মুহূর্তেও শব্দ পরিবর্তন করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমমতা শঙ্করে মুগ্ধ চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধএকজন অরুণ দাশগুপ্ত