শঙ্কার রাতের পর ফের মিছিলে লাখো মানুষ

মিয়ানমার নিয়ে জাতিসংঘে জরুরি বৈঠক

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের শহরগুলোতে নবম দিনের মতো সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদে লাখো মানুষ যোগ দিয়েছে। গতকাল রোববারের এই সকালের আগের রাতটি শঙ্কায় কেটেছে দেশটির বাসিন্দাদের। কারণ শনিবার রাতে গণবিক্ষোভের সুপরিচিত সমর্থকদের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়ে রাতে বাড়িতে কোনো অতিথি এলে কর্তৃপক্ষকে সে বিষয়ে জানানোর একটি আইন ফের চালু করে সামরিক জান্তা। এতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো আদালতের অনুমতি ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কাউকে গ্রেপ্তার ও নাগরিকদের বাড়ি তল্লাশির অনুমোদন পায়।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে ব্যাপক হারে বল প্রয়োগ করছে সেনাবাহিনী-সমপ্রতি এই অভিযোগ তুলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত তদন্তকারী অফিসার টমাস অ্যান্ড্রুস। এর প্রেক্ষিতে এবার জাতিসংঘে চিঠি লিখলেন মিয়ানমার পার্লামেন্টের ৩০০ জন সদস্য। এমপিদের চিঠি পাওয়ার পর শুক্রবার জরুরি বৈঠক ডাকা হয় জাতিসংঘ সদর দফতরে। বৈঠকে চিঠিটি পাঠ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটেনের প্রতিনিধি জুলিয়ান ব্রেথওয়েট। মানবাধিকার পরিষদকে অবিলম্বে মিয়ানমারে তদন্ত শুরুর আবেদন জানান তিনি। খবর বিডিনিউজ ও বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গতকাল প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা সাদা পোশাক পরে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনের কেন্দ্রস্থল দিয়ে মিছিল করে যায়। এ সময় তাদের হাতে দেশটির সাবেক নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি চেয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছিল।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সরকারকে উচ্ছেদ করে নেত্রী সু চি ও অপর শীর্ষ নেতাদের আটক করে। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে রাজপথের সবচেয়ে বড় প্রতিবাদগুলোর কারণে ইয়াঙ্গনের সড়কপথে চলাচলকারী বাসগুলো ধীরে ধীরে এগিয়েছে, প্রতিবাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হর্নও বাজিয়েছে। এখানে অনেক প্রতিবাদকারী কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে লেখা ‘রাতে লোকজনকে অপহরণ করা বন্ধ করুন’ প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন। দেশটির বহু জায়গায় প্রতিবাদকারীদের হাতে সু চির ছবি ছিল।
ওয়াকিটকি আমদানির যে অভিযোগে তাকে আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে আজ তার মেয়াদ শেষ হবে। এরপর কী হবে তা জানতে সু চির আইনজীবী খিন মং জ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৮৪ জনেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার জানিয়েছে। এদের অধিকাংশকেই রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠী বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকের কর্মী ওয়াই হানিন পুইন্ট থন টুইটারে বলেছেন, যখন বিশ্ব সমপ্রদায় সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা করছে তখন মিন অং হ্লাইং ভয় ও অস্থিরতা উস্কে দেওয়ার প্রত্যেকটি উপায় ব্যবহার করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবৈধ ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ
পরবর্তী নিবন্ধভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে মোবাইল চুরি