লেখালেখির আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি

টিপু কিবরিয়া সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

| বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ at ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

শিশুতোষ বিভিন্ন বই লিখে একসময় জনপ্রিয় হলেও সাহিত্য চর্চার আড়ালে টিপু কিবরিয়ার অপরাধের জগত সামনে এসেছিল এক দশক আগেই; শিশু পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট তৈরি ও বিক্রি অভিযোগে ধরা পড়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় বছর সাতেক জেল খেটে ২০২১ সালে মুক্তি পেলেও আগের মত জড়িয়েছেন একই অপরাধে। ছিন্নমূল শিশুদের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সেগুলো বিক্রি করছিলেন বিদেশে। খবর বিডিনিউজের।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের (সিটিটিসি) জালে সেই ঘটনা ফের ধরা পড়লে গত মঙ্গলবার খিলগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়াকে। গ্রেপ্তার হয়েছেন মো. কামরুল ইসলাম ওরফে সাগর নামে তার এক সহযোগীও।

গ্রেপ্তার দুজনের বিষয়ে গতকাল বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিটিটিসির প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। প্রচুর শিশু পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট ও সরঞ্জাম জব্দের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এক সময়কার জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক ছিলেন টিপু কিবরিয়া। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে বাংলায় স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ১৯৯১ সালে সেবা প্রকাশনীর মাসিক ‘কিশোর পত্রিকা’য় সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজের পাশাপাশি টিপু শিশু সাহিত্য রচনা করতেন। তার অর্ধশতাধিক বই রয়েছে, যার বেশিরভাগই সেবা প্রকাশনীর। এরই মধ্যে ‘একশো এক’ নামে একটি কবিতার বইও প্রকাশ পেয়েছে তার।

লেখালেখির আড়ালে টিপু ২০০৫ সাল থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট তৈরি শুরু করেন বলে জানান অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এই অপরাধের জড়িত থাকার পর ২০১৪ সালে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হন। পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়। ২০২১ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে সাহিত্য চর্চার আড়ালে পুনরায় শিশু পর্নোগ্রাফির সেই পুরনো পথেই হাঁটা শুরু করেন। টিপু ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি কন্টেন্ট বানান। সাংবাদিক বেশে নিজে গুলিস্তান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের বাসায় ডেকে নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পার্কের ঝোপঝাড়েও শিশুদের অশ্লীল ছবি ধারণ করেন। এজন্য কয়েকজন তাকে সহযোগিতা করেন। প্রাথমিকভাবে টিপুর ডিভাইসগুলো থেকে ২০ জন পথশিশুর ছবি পাওয়া গেছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান বলেন, এসব ছবি ও ভিডিও পর্নোগ্রাফির সাইটে আপলোড করতেন। ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও জর্মানির নাগরিকদের কাছেও বিক্রি করতেন। তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার পর্নোগ্রাফি ছবি ও এক হাজার ভিডিও পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅসুস্থ বিএনপি নেতা এম এ আজিজকে দেখতে হাসপাতালে খসরু
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ সুজনের