করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিত্রনায়িকা, নির্মাতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে।
রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কবরীকে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ফারুক আহমেদ। বিডিনিউজ
কবরীর ছেলে শাকের চিশতী বলেন, “মায়ের শারীরিক অবস্থা এখন বেশ কমপ্লিকেটেড। তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইছি।”
৭১ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। পাশাপাশি তার শারীরিক দুর্বলতাও রয়েছে।
গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসার পরপরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কবরীকে।
পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় তাকে।
আইসিইউতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কবরীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল বলে জানান তার ছেলে শাকের। বৃহস্পতিবার হঠাৎ অবস্থার অবনতি ঘটলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় তাকে।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্ম নেওয়া মিনা পালের (কবরীর পূর্ব নাম) শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে।
১৯৬৪ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মিনা পাল থেকে কবরী হয়ে উঠেন তিনি।
দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘সুজন সখী’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘সারেং বউ’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’সহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনেত্রী কবরী একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের কোলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেখানে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।
পরে দেশে ফিরে চলচ্চিত্রে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি ২০০৬ সালে ‘আয়না’ নামে একটি চলচ্চিত্রের পরিচালনার মধ্য দিয়ে নির্মাণে অভিষেক ঘটে কবরীর। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ হাত দেন কবরী।
নিয়মিত লেখালেখিও করেন কবরী। ২০১৭ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর পাবলিশিং লিমিটেড (বিপিএল) থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা স্মৃতিচারণমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী।