রাষ্ট্রদূত হয়ে রুনার অন্যরকম এক দিন

| মঙ্গলবার , ১২ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

দিনটা অন্যরকম ছিল ধলপুরের কিশোরী রুনার জন্য। সচরাচর কাটানো আরেকটা দিনের মত নয়। কেননা এদিন তিনি একজন ‘রাষ্ট্রদূত’ বনে যান, হোক না তা একদিনের জন্য। গতকাল সোমবার বাংলাদেশে সুইডেন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে উচ্ছ্বসিত এই কিশোরীও। প্রতীকী হলেও একদিনের এ কার্যক্রম অনেক কিছুই শিখিয়েছে তাকে, বাড়িয়েছে আত্মবিশ্বাস।
আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে এদিন প্রতীকীভাবে ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের ওই পদের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকার ধলপুরে শিশু ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা এই কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আয়োজনে ‘গার্লস টেকওভার’ নামের বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ ছিল এ পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিশোরী ও যুবনারীদের উৎসাহিতকরণের এ কর্মসূচির বিস্তারিত জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করে রুনা দাবি তুলেছেন, দেশের সব স্তরের সব কিশোরী ও যুবনারী যেন সমান অধিকার ও সমান সুযোগ পায়।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বলছে, প্রতিবছর বাংলাদেশসহ সাড়া বিশ্বজুড়ে ‘মেয়ে আমি সমানে সমান’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এ আয়োজন করা হয়। কিশোরী ও যুবনারীদের সক্ষমতা তৈরি ও নেতৃত্ব বিকাশে বিশ্বব্যাপী আওয়াজ তোলা এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশে এ মাসে প্রায় ৭০টি টেকওভারের আয়োজন করেছে সংস্থাটি, যেখানে রুনার মতো দেশের নানা প্রান্তের মেয়েরা দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সরকারি-নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ একদিনের জন্য প্রতীকীভাবে গ্রহণ করবে।
সুইডিশ রাষ্ট্রদূত পদে প্রতীকী দায়িত্ব পালনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রুনা বলেন, আজ একজন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার মধ্যে এমন আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে যে, আমি নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম এবং আমার মত অন্যান্য কিশোরীদেরও ক্ষমতায়নে অনুপ্রেরণা প্রদান করতে পারব, তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে, বিশেষ করে এ বছরের প্রতিপাদ্য অনুযায়ী প্রযুক্তিগত শিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করতে পারব।
আমাদের কমিউনিটিতে মেয়েরা অধিকাংশ সময়ই বুঝতে পারে না তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বিকাশের মাধ্যমে তারা কতদূর পৌঁছাতে সক্ষম। তারাও পারে নেতৃত্ব পর্যায়ে পৌঁছে সমাজে পরিবর্তন আনতে, জানান রুনা।
রুনা তার কমিউনিটির যুবদলেরও একজন সদস্য। দলের হয়ে কমিউনিটির শিশুদের শিক্ষা এবং কিশোরী ও যুব নারীদের অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধেও কাজ করে।
ঢাকায় সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেঙ বার্গ ফন লিন্ডে বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে মেয়েদের ক্ষমতা ও যোগ্যতাকে উদযাপন করছি, সেই সঙ্গে সব বাধা ভেঙ্গে চ্যালেঞ্জ করছি সমাজে প্রচলিত সকল চিরাচরিত প্রথাকে, দাবি জানাচ্ছি পরিবর্তনের।
বিদ্যমান সংকট চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাস্তবে এবং অনলাইনে মানবাধিকার লংঘনের যে কোনো ঘটনার প্রথম শিকার হয় মেয়েরাই। বয়স ও জেন্ডারের কারণে তারা দ্বিগুণ বৈষম্যের শিকার হয়। একদিনের জন্য রাষ্ট্রদূতের এই প্রতীকী দায়িত্ব গ্রহণ, মেয়েদের কণ্ঠ আজ ও আগামীতে সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রকাশের অন্যতম উপায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবরের সম্পদের মামলার রায় আজ
পরবর্তী নিবন্ধসস্ত্রীক মুসাকে ডিবির তলব