পাকিস্তানের বালোচিস্তানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শেষ হয়েছে। জঙ্গিদের দখলে থাকা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে ৩৪৬ জন জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ৩৩ জন বিএলএ (বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি) সদস্য নিহত হয়েছেন। অভিযানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৮ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। ৩৪৬ জন পণবন্দিকে মুক্ত করা হয়েছে। জাফর এক্সপ্রেসে সেনাবাহিনীর ২৭ জন কর্মকর্তা সাধারণ যাত্রী হিসাবে ছিলেন। তারা কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না। তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিদ্রোহীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃত সেনার সংখ্যা ২৮ জন।
গতকাল বুধবার বিদ্রোহীরা দাবি করেছিলেন, তারা ৫০ জন যাত্রীকে হত্যা করেছেন। সরকার তাদের কথা না–মানলে বাকিদেরও হত্যা করা হবে। ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন বিদ্রোহীরা। তারা মূলত বিএলএ’র সদস্য। এই সংগঠনের যে সমস্ত সদস্যকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বন্দি করেছে, তাদের মুক্তির দাবিতে ট্রেন অপহরণ করা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার থেকেই পণবন্দিদের মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী। তবে বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট পরে মহিলা এবং শিশুদের ‘মানবঢাল’ বানিয়ে লড়ছিলেন বিদ্রোহীরা। পণবন্দিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। ফলে অভিযানে জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের হত্যা করে যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানায় পাকিস্তানি বাহিনী।
এদিকে, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএ–কে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বিএলএ হলো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি, যারা বেলুচিস্তানের জন্য অধিকতর স্বায়ত্তশাসন, নয়তো সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করে আসছে।
সন্ত্রাসবাদী হামলায় মাঝেমাঝেই কেঁপে ওঠে দক্ষিণ–পশ্চিম পাকিস্তানের বালোচিস্তান। তবে এই ধরনের এঙপ্রেস ট্রেন অপহরণের ঘটনা বিরল। যে সব যাত্রীকে ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তারা বর্ণনা করেছেন। কীভাবে গুলির শব্দের মাঝে কোনও রকমে তারা দমবন্ধ করে টিকেছিলেন, মুক্তির পর জানিয়েছেন বিস্তারিত। মৃত্যুর আতঙ্ক প্রতি মুহূর্তে তাদের গ্রাস করেছিল। কত যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।