যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে এলো ৪৫ লাখ টিকা

| রবিবার , ৪ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে চারটি চালানে দেশে এসেছে ৪৫ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা। এর মধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাস মহামারীর মারাত্মক বিস্তারের মধ্যে টিকা নিয়ে চলমান সংকট আপাতত কাটল। দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৩ লাখ ব্যক্তিকে টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে। ৪৫ লাখ ডোজ দিয়ে সাড়ে ২২ লাখ জনের টিকাদান হবে। চারটি ফ্লাইটে গতকাল শনিবার ভোর ও সকাল এবং শুক্রবার রাতে ৪৫ লাখ টিকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। খবর বিডিনিউজের।
শুক্রবার রাতে দুটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্নার তৈরি ১৩ লাখ এবং চীনের সিনোফার্মের ১০ লাখ ডোজ টিকা আসে। এরপর গতকাল ভোর সাড়ে ৫টায় একটি এবং বেলা পৌনে ৯টায় আরেকটি ফ্লাইটে বাকি টিকা এসেছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন। চীন থেকে সিনোফার্মের যে দেড় কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশ কিনছে, তার অংশ হিসেবে এসব টিকা এসেছে। আর মডার্নার টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাঙের আওতায় বিনামূল্যে। টিকার দুটি চালান বুঝে নেওয়ার পর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিকার সংকটে দেশে গণ টিকাদান কর্মসূচিতে ছন্দপতন হয়েছিল। এসব টিকা আসায় গণটিকাদান কর্মসূচি আবারও গতি পাবে।
তিনি বলেন, টিকাদান কার্যক্রম আমরা জোরেশোরেই শুরু করেছিলাম। টিকা না পাওয়ায় মাঝখানে কিছুদিনের জন্য টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন আমরা আনন্দের সাথে বলতে পারি, আগামীতে টিকার আর কোনো অভাব হবে না। ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎস থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা পাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে বা তার পরে জনজন অ্যান্ড জনসন থেকে আরও সাত কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।
টিকা পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, গণ টিকাদান এবার ‘পুরোদমে’ শুরু হবে। কোভ্যাঙের আওতায় মডার্নার ১৩ লাখ ডোজ টিকা নিয়ে রাত ১১টা ১৩ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিমানবন্দরে নামে। বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাঙের আগে ফাইজারের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ করোনা ভাইরাসের টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে, যা ৩১ মে দেশে পৌঁছায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো কোভ্যাঙ, যা বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে।
মডার্নার টিকা আসার ঘণ্টা দেড়েক পর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকার ১০ লাখ ডোজ ঢাকায় পৌঁছায়। তখনই মডার্নার আরও ১২ লাখ ডোজ এবং সিনোফার্মের ১০ লাখ ডোজ টিকা গতকাল সকালে দেশে পৌঁছাবে বলে জানানো হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ মাসে সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ টিকাই পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী মাসে আরও বেশি টিকা আসবে বলে আমরা আশা করছি। সেটা ৩৫ থেকে ৪০ লাখ ডোজ হতে পারে। এর আগে চীনের উপহার হিসেবে গত ১২ মে ৫ লাখ ডোজ এবং ১৩ জুন ৬ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা ঢাকা পৌঁছায়। এবারের টিকা এসেছে সরকারের সঙ্গে টিকা কেনা চুক্তির আওতায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গত ২৫ মে জানিয়েছিলেন চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনা হবে। দুদিন পর ২৭ মে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিনোফার্মের প্রতি ডোজ ১০ ডলার দরে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিশ্র ডোজ নিয়ে দেশে গবেষণার উদ্যোগ
পরবর্তী নিবন্ধবাজারে, অলি-গলিতে ভিড়