মৃত ব্যক্তিকেও সদস্য বানাল বিএনপি!

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১১:৪৪ অপরাহ্ণ

২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর মারা যান সন্দ্বীপ পৌরসভা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পদক মামুন ফেরদৌস স্বপন। তার প্রায় এক মাস পার একই বছরের ১৮ নভেম্বর সকাল ১১ টায় মারা যান রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৪ নং দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মো. শামসুল আলম তালুকদার কোম্পানি।

এ দুইজনের মৃত্যুর যথাক্রমে তিন মাস ও আড়াই মাস পর গঠিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আওতাধীন দুইটি ইউনিট কমিটিতে তাদের সদস্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে!

মৃত ব্যক্তির নাম কমিটিতে দেখে সমালোচনা করছেন বিএনপি’র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সমালোচনা করছেন অনেকে।

জানা গেছে, গত ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আওতাধীন ১৫টি ইউনিট কমিটি অনুমোদন দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। তবে তা প্রকাশ হয় পরদিন ৩১ জানুয়ারি। অনুমোদিত কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে সন্দ্বীপ পৌরসভা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলাও।

৪৮ সদস্য বিশিষ্ট সন্দ্বীপ পৌরসভা কমিটিতে ১৮ নম্বর সদস্য করা হয় মামুন ফেরদৌস স্বপনকে। ৫৯ সদস্য বিশিষ্ট রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমিটিতে ২২ নম্বর সদস্য করা হয় মো. শামসুল আলম তালুকদার কোম্পানিকে।

মৃত ব্যক্তিকে কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করায় নূর হোসাইন নূরু নামে একজন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ব্যঙ্গ করে লিখেন, “মৃত ব্যক্তি ভোট দিতে পারলে কমিটিতেও আসতে পারে!”

আরেকজন লিখেন- “মরহুম শামসুল আলম কোম্পানিকে মূল্যায়ন করায় উনার রুহের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি”।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, “তৃণমূল থেকে নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন নেতার পক্ষ থেকে একাধিক দীর্ঘ তালিকা জমা দেয়। দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় বেশি সংখ্যক নাম জমা পড়ে। শতাধিকের উপর নাম ছিল সেখানে। যার কারণে ঝামেলাটা হয়েছে। আজ (১ ফেব্রুয়ারি) সেটা সংশোধন করে দিয়েছি।

সদ্য ঘোষিত সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক এডভোকেট মো. আবু তাহের দৈনিক আজাদীকে বলেন, “কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে। বিভিন্ন গ্রুপের পক্ষ থেকে তালিকা জমা দেয়। সেখানে মামুন ফেরদৌস স্বপনের নামও ছিল। তিনি পরে মারা গেছেন। তাই তার নাম থেকে হেছে”।

‘একাধিক তালিকা জমা দেয়ায় তার (মামুন ফেরদৌস স্বপন) মারা যাওয়ার বিষয়টি আকবর ভাইয়ের (গোলাম আকবর খোন্দকার) নলেজে ছিল না”, যোগ করেন এডভোকেট তাহের।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আবু আহমেদ হাসনাত দৈনিক আজাদীকে বলেন, “কমিটি আরো কয়েক মাস আগে প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু প্রকাশ হয়েছে পরে। কমিটি প্রস্তুতকালীন সময়ে শামসুল আলম কোম্পানি জীবিত ছিলেন। তাছাড়া এমন না যে তিনি বাইরের লোক। তিনি তো একটি ইউনিয়নে বিএনপি’র সভাপতি ছিলেন। এখন বিষয়টি সামনে আসার পর তার জায়গায় আরেকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধকনডেম সেলে নিশ্চুপ প্রদীপ-লিয়াকত
পরবর্তী নিবন্ধদাঁড়ানো ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল মোটরসাইকেল