মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | শুক্রবার , ২৯ মার্চ, ২০২৪ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র রমজান মাস এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস যার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আল্লাহপাক নিজেই এই মাসকে মর্যাদাশীল করেছেন। কারণ এই মাসে আল্লাহপাক কালাম পবিত্র আলকোরআন লওহে মাহফুজ হতে প্রথম আসমান এসেছে। প্রথম আসমান হতে মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ২৩ বছর অবতীর্ণ হয়েছে। মহান আল্লাহর বাণী আলকোরআন মানব জাতির জন্য অমূল্য নেয়ামত। এই নেয়ামত প্রাপ্তির কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। তাই আল্লাহর প্রিয় মুমিন বান্দা এই মাসে রোজার সাথে কোরআন তেলাওয়াত, যিকির, তারাবিহ, দান, ছদকা ইত্যাদি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ করে থাকে। আত্মা ও নফস মানুষের দুটি বাহুর ন্যায়, মানব জীবনের দুটি স্তম্ভও বলা যায়। আমরা কিছু সময় নফসকে খাদ্য প্রদান করি আর কিছু সময় আত্মার খোরাক দিয়ে (রোজা পালন করে) আত্মাকে সজীব করি।

পাক ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম, বিশিষ্ট মুফাস্‌সির, মুফতি আহম্মদ এয়ার খান নাঈমী (রহ.) রমজানের রোজা সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, ‘শরীরে আত্মার সঞ্চার হওয়ার পূর্বে কোনো খাবার প্রয়োজন ছিল না এবং শরীর পাপ থেকেও মুক্ত ছিল। আত্মা শরীরে প্রবেশ করার পর খাদ্যের প্রয়োজন দেখা দেয়। তাই পাপও হতে শুরু হয়। রোজা দ্বারা কিছু সময় ক্ষুধাগ্রস্ত হয়ে থাকতে হয় যাতে প্রথম অবস্থার কথা স্মরণ হয় এবং পাপ থেকে দূরে থাকে।’ (সূত্র : আছরারুল আহকাম : মুফতি এয়ার খাঁন নাঈমী)

সকল ইবাদতসমূহ বিশেষ অবস্থায় থাকে কিন্তু রোজা প্রত্যেক অবস্থায় মুমিন মুসলমানের সাথে বিদ্যমান। শয়নে, জাগরণে, খেলাধূলা, কাজ কর্মে সকল অবস্থায় রোজা মুখের মধ্যে থাকে বলেই রমজানের রোজার গুরুত্ব অপরিসীম।

অন্যান্য ইবাদত দ্বারা আল্লাহর নিকট শোকর প্রকাশ করা হয় কিন্তু রোজার দ্বারা ছবর প্রকাশ হয়। কিয়ামতের দিন জলিমের সকল ইবাদত মজলুম ব্যক্তি নিয়ে গেলেও এই ছবরের পূণ্য কেউ নিতে পারবে না। আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হবে এটিতো আমার জিনিস, অপর কেউ ইহার ভাগ পাবে না। অন্য কোনো পূণ্যের কারণে রোজাদার ব্যক্তি মুক্তি না পেলেও রোজার বরকতে মুক্তি পাবে। আল্লাহ পাক সকল রোজাদার ও সকল মুমিন মুসলমানদের পরকালে মুক্তি দান করুক। আমিন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার অকাল মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধএকটি ফেরি, অনেক দুর্ভোগ