মামুনুলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রীর ধর্ষণের মামলা

| শনিবার , ১ মে, ২০২১ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন তার কথিত ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণা। গতকাল শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জেলার পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান। এদিকে জান্নাত আরা ঝর্ণা স্বেচ্ছায় থানায় এসে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আসার পর তার মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর মহিলা পুলিশের মাধ্যমে তাকে নিরাপত্তা দিয়ে শহরের সদর জেনারেল হাসপাতালে মামলায় প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহের জন্য তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। পরে সে নিজেই বাড়ি ফিরে গেছেন। গতকাল বিকালে এসব তথ্য জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
এজাহারে বলা হয়েছে, শহীদুল ইসলামের সঙ্গে ঝর্ণার দাম্পত্য জীবন ‘সুখে শান্তিতে’ অতিবাহিত হচ্ছিল। তাদের ১৭ ও ১৩ বছর বয়সী দুই সন্তান আছে। স্বামীর ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুল হকের সঙ্গে ঝর্ণার পরিচয় হয়। বাদীর অভিযোগ, তাদের বাসায় অবাধ যাতায়াত থাকার সুবাধে ছোটখাটো সাংসারিক মতানৈক্যের মধ্যে মামুনুল ‘সুকৌশলে’ প্রবেশ করে স্বামী-স্ত্রী মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। সাংসারিক টানাপড়েনের এক পর্যায়ে মামুনুলের ‘কুপরামর্শে’ ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শহীদুলের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
এই নারী অভিযোগ করেছেন, বিচ্ছেদের পর ‘তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে’ মামুনুল তাকে ঢাকায় আসার জন্য ‘প্ররোচিত’ করেন। ঢাকায় আসার পর তার পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে মামুনুল নানাভাবে তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেন। এর ধারাবাহিকতায় মামুনুলের পরামর্শে কলাবাগানে এক বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন জানিয়ে বাদী অভিযোগ করেছেন, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে এবং ‘অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে’ মামুনুল হক তার সঙ্গে ‘শারীরিক সর্ম্পকও’ করেছেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে মামুনুল ‘করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ’ করতে থাকেন।
এজাহারে বলা হয়, ঘোরাঘুরির কথা বলে ২০১৮ সাল থেকে মামুনুল বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে বাদীকে নিয়ে যেতেন। ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে ঘুরতে নিয়ে গিয়েও মামুনুল তাকে ‘ধর্ষণ করেন’।
সেদিন সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে ওই নারীসহ মামুনুলকে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় খবর পেয়ে হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।
এজাহারে বলা হয়েছে, পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল। পরে তাকে তাদের বাসায় উঠতে না দিয়ে পরিচিত একজনের বাসায় আটকে রাখেন; কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেননি। পরে তার বাবার আবেদনের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করেছে মামুনুল : জান্নাত
পরবর্তী নিবন্ধলকডাউন থেকে বের হতে সরকারের কাছে ১০ সুপারিশ