লকডাউন থেকে বের হতে সরকারের কাছে ১০ সুপারিশ

| শনিবার , ১ মে, ২০২১ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এখনো পর্যন্ত লকডাউন কিংবা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার পদ্ধতিকে সবচেয়ে কার্যকর মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে লকডাউনের মতো একটি বিষয় দীর্ঘদিন চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এতে মানুষের জীব-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লকডাউন তুলে নিলেও সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার কৌশল ঠিক করেছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হিসেবে ১০টি সুপারিশ করেছেন তারা। সুপারিশগুলো সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।
১. অবশ্যই মুখে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে ভাইরাসের ঘনত্ব বেশি, গণপরিবহন, সুপার মার্কেট, বাজার, ব্যাংক, হাসপাতাল- এসব জায়গায় কেউ মাস্ক ছাড়া যেতে পারবে না। মাস্ক না পরলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
২. অফিসে উপস্থিতি অর্ধেক করার প্রস্তাব করেছে পরামর্শক কমিটি। তবে উপস্থিতি এক-তৃতীয়াংশ হলে ভালো হয়। অফিসগুলোতে যেন দল বেঁধে খাওয়া না হয়।
৩. গণপরিবহন যেন তাদের সক্ষমতার ৫০ ভাগ যাত্রী বহন করে। এই নিয়ম দীর্ঘদিনের জন্য চালু থাকতে হবে। এছাড়া প্রাইভেট ও তিন চাকার ট্যাঙি একজন করে যাত্রী বহন করবে। তবে পরিবারের সদস্য হলে দুজন বহন করতে পারে। অবশ্য রিকশা, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলে কোনো সমস্যা নেই।
৪. খাবারের দোকান, মুদি দোকান, মার্কেট ও শপিংমল দিনের লম্বা সময়ের জন্য খোলা রাখা। বেশি সময় খোলা থাকলে মানুষের ভিড় কম হবে। কাঁচাবাজারগুলো উন্মুক্ত জায়গায় পরিচালনা করতে হবে। রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না।
৫. জনসমাবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মসজিদ, মন্দির ও চার্চে যাতে ভিড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রার্থনায় সীমিত সংখ্যক মানুষ যেতে পারবে।
৬. যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
৭. কলকারখানার প্রবেশ মুখে শ্রমিকদের জন্য স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা রাখতে রাখবে। কারখানার ভেতরে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
৮. যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হয় ততদিন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ দিতে হবে।
৯. বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে।
১০. আইসোলেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া টিকাদান কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। টেস্ট করার সুবিধা বাড়াতে হবে।
জাতীয় পরামর্শক কমিটি মনে করে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অব্যাহত না রাখলে সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামুনুলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রীর ধর্ষণের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধতদন্তে প্রমাণ পেলে তবে আনভীরকে গ্রেপ্তার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী