মাঝারি বৃষ্টিতে জলজট

ঈদের তৃতীয় দিনের আনন্দ মলিন

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৭ মে, ২০২২ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস ছিল গত বৃহস্পতিবার। ওইদিন ভোররাতে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে নগরে। আর এতে নগরের অনেক এলাকা তলিয়ে যায়। তীব্র জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েন কর্মস্থলমুখী লোকজন। একইসঙ্গে লোকজন ঘরবন্দী হয়ে পড়ায় মলিন হয় ঈদের তৃতীয় দিনের আনন্দও।

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে নগরীতে বৃষ্টি শুরু হয়। শুরুতে মুষলধারে হলেও ধীরে ধীরে বেগ কমে আসে। এদিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরে ২৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। মাঝারি এ বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটু এবং কোথাও গোড়ালিসমান পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ সময় ফিরিঙ্গীবাজার ও বাকলিয়ার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ফিরিঙ্গীবাজার, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বাকলিয়া, ডিসি রোড, চকবাজার ও চান্দগাঁও এলাকায় হাঁটু সমান পানি জমেছিল। ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে যায়। এ ধরনের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রায়হান ইউছুপ লেখেন– ‘চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত প্রকল্পের কাজে নিয়োগকৃত অযোগ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা, সীমাহীন গাফেলতির কারণে ও তদারককারীগনের উদাসীনতায় এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর চরম ব্যর্থতায় ৩৩নং ফিরিঙ্গী বাজার এলাকার বংশাল রোড, আর সি চার্চ রোড, চুরিয়ালটুলী, ডা. মান্নান গলি, আলকরণ ২নং ও ৩নং গলিসহ প্রায় সমস্ত এলাকার মানুষ পবিত্র ঈদউলফিতর এর তৃতীয় দিন ভোর বেলার বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে। সমস্যা সমাধানে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’ এ এলাকায় আগেরদিন বুধবারও পানি জমেছিল বলে জানান স্থানীয় কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের চকবাজার মুহাম্মদ আলী শাহ দরগাহ লেনের বাসিন্দা আবদুল হামিদ বলেন, সকাল ৬টায় পানি উঠেছে। এখন দুপুর ১২ টা। পানি নামে নাই। পানির জন্য ঈদ আনন্দ মাটি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কাপাসগোলা আবদুল হাকিম সওদাগর লেনের বাসিন্দা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে চট্টগ্রামবাসী কখন যে মুক্তি পাবে আল্লাহই ভালো জানেন। সামান্য বৃষ্টিতে আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়েছি। সামনে বর্ষাকালে অবস্থা আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।

নগরের ডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা শহীদ বলেন, রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ পানি। তাও ময়লা পানি। মানুষের চরম দুর্ভোগ হয়েছে। হালিশহর শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জসীম বলেন, সকালে প্রায় হাঁটু সমান পানি ছিল। সামনের খাল ভরাট থাকায় পানি নামতে পারেনি বলে জানান তিনি।

নগরে জলাবদ্ধতা চলমান মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বৃহস্পতিবার দুপুরে দৈনিক আজাদীকে বলেন, সকাল থেকে আমাদের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম মাঠে ছিল। পানি যেসব জায়গায় আটকে যাচ্ছিল সেখানে পরিষ্কার করে দিয়েছে। পানি নেমেও গেছে। কোথায় কোথায় পানি আটকে ছিল জানতে চাইলে বলেন, কয়েকটি খালে তো কাজ চলমান আছে। যেমন উত্তরা খাল, চান্দগাঁও আবাসিকের পেছনে অনন্যা আবাসিকের ওদিকে। সেখানে পানি আটকে ছিল। বামনশাহী খালেও আটকে ছিল। এছাড়া দুই নম্বর গেইট, ফিরিঙ্গীবাজার, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় পানি আটকে ছিল বলে জানান লে. কর্নেল শাহ আলী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে নিহত ৬ আহত ২৬
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন