মশার লার্ভা নিধনের বিটিআই খালাসে জালিয়াতি

আমদানিকারকসহ ৫ জনকে আসামি করে চট্টগ্রাম কাস্টমসের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৫ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা নিধনে জৈব কীটনাশক ব্যাসিলাস থুরিংয়েইনসিস ইসরায়েলেনসিস (বিটিআই) এর আমদানিকারকসিএন্ডএফ এজেন্টসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার বন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বাকিবিল্লাহ।

মামলার আসামিরা হলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মার্শাল এগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক এম. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সিএন্ডএফ এজেন্ট তিভুলি এন্টারপ্রাইজের মালিক বিশ্বনাথ কর্মকার, সিএন্ডএফ এজেন্টের কাস্টমস সরকার মো. জাকির হোসেন ও তার সহযোগী শহীদুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ কেরানিগঞ্জ আবদুল্লাহপুরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মার্শাল এগ্রোভেট কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চীন থেকে ৫ টন বিটিআই আমদানি করে। আমদানিকৃত পণ্যের চালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ২৬ জুলাই আমদানিকারকের মনোনীত নগরীর সিনেমা প্যালেস এলাকার সিএন্ডএফ এজেন্ট তিভুলি এন্টারপ্রাইজ বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। পরবর্তীতে সিএন্ডএফ এজেন্ট তিভুলি এন্টারপ্রাইজের কাস্টমস সরকার মো. জাকির হোসেন ও তার সহেযোগী শহীদুল ইসলাম যৌথভাবে এসে আমদানিকারকের পক্ষে সংশ্লিষ্ট শুল্কায়ন শাখায় বিভিন্ন দলিলাদি দাখিল করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দলিলাদি যাচাইয়ের সুযোগ ছিল না। পরবর্তীতে আমদানিকারকের দলিলাদি যাচাইয়ের জন্য গত ২১ আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। পরদিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সংরক্ষিত নথিপত্র ও বালাম বইয়ের সাথে দাখিলকৃত আমদানি লাইসেন্স ও কীটনাশক নিবন্ধন সনদে গড়মিল রয়েছে। অর্থাৎ আসামিরা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মিথ্যা ডকুমেন্টকে আসল হিসেবে উপস্থাপন করে কাস্টমস আইনের বিধি নিষেধ লঙ্ঘন করে চোরাচালানের মাধ্যমে বিটিআই আমদানি করেছে। সরকারি দপ্তরে মিথ্যা ও জাল দলিলাদি দাখিল করার দায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্ট ১৯৭৪ এর সেকশন ২৫ (বি) এবং পেনাল কোড ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

কাস্টমসের উপ কমিশনার ব্যারিস্টার বদরুজ্জামান মুন্সি জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিটিআই আমদানির ঘটনায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান।

জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনজয় কুমার সিনহা দৈনিক আজাদীকে বলেন, জাল দলিল উপস্থাপন করে পণ্য খালাসের দায়ে আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা।

এর আগে গত ২১ আগস্ট বিটিআই নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় এক চীনা নাগরিকসহ চার জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। মামলায় আমদানিকারক মার্শাল এগ্রোভেটের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এক পরিচালক এবং চীনা নাগরিক আর লি কিওয়াংকে আসামি করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটির আইনজীবী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরিবেশক মার্শাল এগ্রোভেট বিটিআই সরবরাহ করেছে মোড়কজাত করে। সিঙ্গাপুরের কোম্পানি ‘বেস্ট কেমিক্যালস’ উৎপাদিত বিটিআই উল্লেখ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে সরবরাহ করে মার্শাল এগ্রোভেট। কিন্তু বেস্ট কেমিক্যালস জানিয়েছে, তারা মার্শাল এগ্রোভেটকে কোনো বিটিআই দেয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেন্দ্রে আবার জমা দেয়া হলো ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা
পরবর্তী নিবন্ধনলকূপের গ্যাস দিয়ে রান্না!