ভুয়া সার্টিফিকেটে কলেজের সভাপতি ৩ মাস পর অব্যাহতি

চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো কলেজ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ‘গভর্নিং বডি’র সভাপতি যিনি হবেন তাকে অবশ্যই স্নাতক পাস হতে হবে। বিধি অনুযায়ী স্নাতক পাসের সার্টিফিকেটসহ আবেদন করলে কক্সবাজারের চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের সভাপতি হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা কলেজটির ‘এডহক কমিটির’ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীকে। কিন্তু বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমাদানের সময় দাখিলকৃত হলফনামায় ফজলুল করিম সাঈদী উচ্চ মাধ্যমিক পাস হিসেবে উল্লেখ করেন। সেই হলফনামাসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় কেউ একজন অভিযোগ করেন- কলেজটির এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া ফজলুল করিম সাঈদী উচ্চ মাধ্যমিক পাস। অবশেষে সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন সভাপতি হওয়ার জন্য আবেদনের সঙ্গে দাখিলকৃত স্নাতক পাসের সার্টিফিকেটটি ভুয়া। এ জন্য সভাপতি হওয়ার তিন মাস না যেতেই ফজলুল করিম সাঈদীকে সরিয়ে তদস্থলে সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)।

এ দিকে আবাসিক মহিলা কলেজের সভাপতি হওয়ার জন্য জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফজলুল করিম সাঈদীর তীব্র সমালোচনাও করছেন অনেকে।

এই সংক্রান্তে গত ১৬ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক আদেশে (স্মারক-আইএনএসও২-৩/০০১৪১/ ২০১৭/ ৪৪১৩/ ৫৫৯৪০) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের গভর্নিং বডি (সংশোধিত) সংবিধি ২০১৯ এর ৭নং ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ভাইস-চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে তাকে সরিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই কমিটি কলেজের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলেও উল্লেখ করা হয় আদেশে।

এই বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা বলেন, ‘চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ পরিচালনায় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া ফজলুল করিম সাঈদীর দাখিলকৃত সার্টিফিকেট যাচাই করা হয়েছে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে। যাচাইকালে দাখিলকৃত সার্টিফিকেট ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরিয়ে ইউএনওকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘পদাধিকার বলে আমি সভাপতি ছিলাম কলেজটির। তবে কী কারণে তিনমাস আগে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল তা জানতাম না। এখন তিনমাসের মাথায় নতুন করে আমাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করার পত্র হাতে এসেছে।’

তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী। তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন আবাসিক মহিলা কলেজের সভাপতি করা হয় তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার কাছে সার্টিফিকেট চায়নি। যদি চাইতো, তাহলে এইচএসসি পাসের সার্টিফিকেট দিতাম। আমি জেলার একজন এমপির ডিও লেটার নিয়ে আবেদন করেছিলাম সভাপতি হতে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোকবল সংকটে ব্যাহত বন্দরের কার্যক্রম
পরবর্তী নিবন্ধবমির ভান করে প্রিজন ভ্যান থেকে পালালো আসামি