ভাই, চাচাকে নিয়ে সোনিয়া ই-অরেঞ্জ থেকে সরিয়েছেন ১৮ কোটি টাকা

| বৃহস্পতিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবীন, তার ভাই বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা ও চাচা মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ ১৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা সরিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হিসাব থেকে এসব টাকা সরিয়েছেন বলে উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে গতকাল বুধবার শুনানির দিন ধার্য ছিল। খবর বাংলানিউজের।
ই-অরেঞ্জ থেকে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার দাবি করে ৫৪৭ গ্রাহকের পক্ষে ছয় গ্রাহকের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিএফআইইউ’র কাছে প্রতিবেদন চান। রুলে গ্রাহকদের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, সত্ত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, অর্থপাচারের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিস্ক্রীয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে সোহেল রানা, সত্ত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে আবেদনকারীসহ অন্যান্য প্রতারিত গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বন্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। ওই আদেশ অনুসারে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও আব্দুল কাইয়ুম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ই-অরেঞ্জ, অরেঞ্জ বাংলাদেশ ও রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনালের নামে ১৩টি হিসাব খুলে লেনদেন করেন। এ ১৩ হিসাবে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের সেপ্টম্বর পর্যন্ত লেনদেন করেছেন। এই সময়ে ১ হাজার ১১১.৪৫ কোটি টাকা জমা ও ১ হাজার ১০৯.৯৭ কোটি টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ২২১.৪২ কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। আর সোনিয়া ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানের নামে ২৪টি হিসাবে লেনদেন করেছেন। ওই ২৪ হিসাবের মাধ্যমে সময়ে সময়ে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি প্রায় ১২০ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। এসব হিসাব স্থগিতের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সিআইডির অনুরোধে তাদের পরিচালিত সকল হিসাবগুলোর লেনদেন ২০২১ সালের ২৫ জুলাই লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে এটির মালিকনায় সোনিয়া মেহজাবিন থাকলেও পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে তার ভাই পুলিশ কর্মকর্তা (বরখাস্ত) শেখ সোহেল রানার স্ত্রী নাজনীন নাহারা বিথির নামে হস্তান্তর করা হয়। অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে বলা হয়, সোনিয়া মেহজাবিন, স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই শেখ সোহেল রানা ও চাচা মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ নগদে টাকা উত্তোলন ও ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং নিজ নামে ক্রয় করার জন্য মোট ১৮.৫৬ কোটি টাকা ই-অরেঞ্জ এর হিসাব হতে স্থানান্তর-উত্তোলন করেন। গ্রাহকদের অগ্রিম মূল্য পরিশোধিত অর্ডারের পণ্য সরবরাহ না করে সন্দেহভাজন উল্লিখিত অর্থ তাদের ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর নগদে উত্তোলন ও ব্যক্তিগত স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করেছেন মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে যা প্রতারণার শামিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই দিনে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা কর আদায়
পরবর্তী নিবন্ধসাথে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিতে বন্ধুকে হত্যা