বৈদেশিক সহায়তা : সাত মাসে ছাড় ৩৩৫ কোটি ডলার

| মঙ্গলবার , ৯ মার্চ, ২০২১ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশের অনুকূলে ৩৩৫ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলো। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ঋণ ও অনুদান মিলে মোট ৩৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছে। এই ছাড় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ কোটি ৩১ লাখ ডলার বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩১০ কোটি ২৩ লাখ ডলার ছাড় হয়।
ইআরডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও উপসচিব সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বিডিনিউজকে বলেন, ‘আসলে বৈদেশিক সহায়তার ছাড় দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে। বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন বেশি হলে বৈদেশিক অথেও ছাড়ও বেশি হয়।’
এডিপি বাস্তবায়ন পিছিয়ে থাকলেও বৈদেশিক সহায়তার ছাড় কেন বাড়ল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এডিপির সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন অংশে হয়ত পিছিয়ে আছে। কিন্তু বৈদেশিক সহায়তা খাতে গত সাত মাসে গত অর্থবছরের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে বলেই বৈদেশিক অথের্র ছাড় বেড়েছে।’
চলতি পুরো অর্থবছরে সরকার মূল এডিপিতে ৮৪৪ কোটি ডলার ছাড় করার লক্ষ্যমাত্রা নেয়। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় সংশোধন করে তা ৭৪১ কোটি ডলারে নামিয়ে এনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে হিসাবে সরকার বৈদেশিক সহায়তা শতভাগ অর্থ ব্যয় করতে চাইলে অর্থবছরের বাকি পাঁচ মাসে আরও ৪০৬ কোটি ডলার ছাড় করতে হবে।
ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি পর্যন্ত দাতা সংস্থা ও দাতা দেশগুলোর কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এই সময়ে সরকার দাতাদের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পেরেছে মোট ২৪৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছিল ৩১২ কোটি ডলার ৭২ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে সরকারের ৬ বিলিয়ন ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে অর্থ ছাড়ের দিক দিয়ে জাপান সকল দাতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ ৮৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের ঋণ সহায়তা ছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৭ কোটি ৪৩ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এছাড়াও চীন ৪৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার এবং ভারত ৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার ছাড় করেছে।
ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সাত মাসে দাতাদের পূঞ্জীভূত পাওনা থেকে দাতাদের কাছে বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করেছ ১০৭ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত পরিশোধ করতে হয়েছিল ১০০ কোটি ৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের সাত মাসে দাতাদের কাছে পাওনা পরিশোধের পর নীট বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় হয়েছে ২২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুগল প্লে বুকসে শিশুদের বই পড়া সহজ করতে নতুন ফিচার
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে ১.২২ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল