বড়লোক ব্যবসায়ী বাবার আদরের সন্তান। ঈদের ছুটিতে নগর ফাঁকা পেয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে ছুটে চলেছেন বেপরোয়া গতিতে। এর মধ্যে তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সও ছিল না। তার এ বেপরোয়া প্রাইভেট কার চালনা কেড়ে নিয়েছে একজন নিরীহ সাইকেল আরোহী কিশোরের প্রাণ। এ ঘটনা ঘটেছে নগরের হালিশহরে। হালিশহর থানার বড়পোল মোড় এলাকায় এ প্রাইভেট কার চাপায় ওসমান গণি (১৯) নামে এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাইভেট কার চালক তানিম হোসেনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুুপুর দুইটায় গ্রেপ্তার তানিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহত সাইকেল আরোহীর মামা আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বড়পোল মোড় সংলগ্ন আড়ংয়ের সামনে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই প্রাইভেট কার চালক তানিম হোসেনকে (১৯) আটক করে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা গেছে, তানিম হোসেন হালিশহর এল ব্লক এলাকার ব্যবসায়ী এরশাদ হোসেনের ছেলে এবং সরকারি কমার্স কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাবার প্রাইভেট কার (চট্ট মেট্রো–গ ১৪–২৮৫৬) নিয়ে সড়কে বেরিয়েছিল ওই কিশোর। সড়ক ফাঁকা পেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল বেপরোয়া গতিতে। এই কিশোরের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। নিহত ওসমান গণি (১৯) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পূর্ব বাইশারী গ্রামের মোহাম্মদ নাছিরের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কার অতিরিক্ত গতিতে এসে রাস্তা পার হতে যাওয়া এক কিশোরকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের। দুর্ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়িটি থামিয়ে চালককে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক চালককে হেফাজতে নেয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওসমান গণি হালিশহর কে ব্লক এলাকায় জানে আলম ভবনের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করতেন। বুধবার সাইকেল নিয়ে বড়পোল এলাকায় সড়ক পার হওয়ার সময় একটি সাদা প্রাইভেটকার তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তিনি ছিটকে পড়লে তার মাথার ওপর দিয়ে গাড়িটি দ্রুতগতিতে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন তানিম হোসেন।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান আজাদীকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে প্রাইভেট কার চালক তানিম হোসেনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে বুধবার বিকালে ঘটনার পর রাত বারোটার দিকে নিহতের আপন বড় মামা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় প্রাইভেট কার চালক কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের দাবি অনুসারে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়নি।