বিদেশের মাটিতে নবান্নের উৎসব

নাজনীন আমান | রবিবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ

গত ৪ অক্টোবর অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে লাভক্রাবাং, ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো এক ভিন্নধর্মী আয়োজন ‘নবান্নের উৎসব’। হেমন্তের নতুন ধান কাটার উৎসবের নামের সাথে মিল রেখে অনুষ্ঠানটির নাম রাখা হয় নবান্ন উৎসব। নতুন ধানের, নতুন চাল দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা পায়েস। বাংলার কৃষকের ঘরে তখন নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব চলে। আর এই আনন্দ দেশ ছাড়িয়ে, ছড়িয়ে পড়েছে প্রবাসেও।

বিদেশের মাটিতে বাঙালিদের মিলনমেলার ভিন্নধর্মী এই আয়োজন শুরু হয় ২০১৮ সাল থেকে। উদ্যোক্তা ফারহিন রহমান। মাঝে করোনাকালীন সময়ে এর উপর কিছুটা ভাটা পড়লেও এবার নতুন উদ্দীপনায় আবার আয়োজন করা হয় এই উৎসবের। আর এই উৎসবে প্রধান আকর্ষণ ছিল পিঠা উৎসব। প্রায় ৩৫ টি পরিবারের সমবেত প্রচেষ্টায় সংঘটিত হয়ে গেল এই উৎসব। এই উৎসবে প্রায় ৩৭ রকমের পিঠা পায়েস এর আয়োজন ছিল। সুজির রসমালাই, গোলাপ পিঠা, ঝিনুক পিঠা, বিবিখানা, ফুলঝুরি, মাছ পিঠা, পাটিসাপটা, ভাপা পিঠা, নারকেল পুলি, আরোও কত নামের যে পিঠা ছিল তা বলে শেষ করা যাবে না। পিঠার পাশাপাশি ছিল মেহেদী কুঠির। আর তার আয়োজক ছিল আমিনা বেগম। সাথে আরও ছিল আকর্ষণীয়, মনোহর পানের ব্যবস্থা।

বাঙালি মানে উৎসব। আর উৎসবের একটি অংশ হল পিঠা পার্বণ। বিদেশের মাটিতে বাঙালি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আচার অনুষ্ঠান তুলে ধরা, চর্চা করা সত্যিই অনেক সাহসিকতার ব্যাপার। এগুলোর মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায় খুব সহজেই। সেদিন সেই অনুষ্ঠানে শুধু বাঙালিরাই নয় অনেক বিদেশী অতিথিরাও এসে মুগ্ধ হয়েছেন। স্বাদ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন ধরনের পিঠার, আর হাত রাঙিয়ে গেছেন বিভিন্ন নকশায় অঙ্কিত মেহেদীর রঙে। কেউ কেউ তো আবার নিজেদেরকে সাজিয়েছেন বাঙালি সাজে যা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। বিদেশ বিভুঁয়ে যারা পরিবার পরিজন ছেড়ে থাকেন, তাদের সেদিন মনে হয়েছিলো এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। জয় হোক এই মিলনমেলার। জয় হোক বাঙালি সংস্কৃতির, বাঙালি ঐতিহ্যের। বিজয়ের এই শুভ লগ্নে এই হোক আমাদের পূর্ণতা, আমাদের আশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড় নিধন বন্ধ করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধঅহংকার মানুষের পতন ঘটায়