বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ

| শনিবার , ৩ অক্টোবর, ২০২০ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

 

২০১৪১৫অর্থবছরে সরকারের বিদেশি ঋণের সুদের হার ছিল ০.৭ শতাংশ। ছয় বছরের ব্যবধানে ২০২০২১ অর্থবছরে সেই সুদের হার দ্বিগুণ হয়েছে। বিদেশ থেকে পাওয়া অনুদানের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে সরকারের বিদেশি ঋণের সুদের হার বেড়েছে। ভবিষ্যতে সুদহার আরও বাড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি ২০২০২১ অর্থবছরে সরকারের দেশিবিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। একই অর্থবছরে সরকার বিদেশ থেকে ঋণ নেবে ৭৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। এই ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে এক হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৪১৫ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদহার ছিল ০.৭ শতাংশ, ২০১৫১৬ অর্থ বছরে ০.৮ শতাংশ, ২০১৭১৮ অর্থ বছরে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৮১৯ অর্থ বছরে ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং সবশেষ ২০১৯২০ অর্থ বছরে হয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি ২০২০২১ অর্থবছরে সরকারকে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ হারে। আগামী অর্থ বছরেও এই হারে সুদ দিতে হবে। তবে ২০২২২৩ অর্থ বছরে বিদেশি ঋণের সুদ হবে ১.৫ শতাংশ। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪১৫ অর্থ বছরের তুলনায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ হার ২০১৮১৯ অর্থ বছরে ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। ২০১৪১৫ অর্থ বছরের অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০১৫১৬ অর্থ বছরে ছিল ১০ শতাংশ, ২০১৬১৭ অর্থ বছরে ছিল ৯ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০১৭১৮ অর্থ বছরে ছিল ৯ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৮১৯ অর্থ বছরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০১৯২০ অর্থ বছরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। খবর বাংলানিউজের।

প্রতিবেদন মতে, ২০২০২১ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদহার ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০২১২২ অর্থ বছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২২২৩ অর্থ বছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। সরকার বাজেটের ঘাটতি অর্থায়নের জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ঋণ নিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরসহ পরবর্তী তিন অর্থবছরে সরকার দেশিবিদেশি ঋণের সুদ বাবদ ২ হাজার ২৫৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা পরিশোধ করবে। এসব অর্থের মধ্যে ২০২০২১ অর্থবছরে পরিশোধ করবে ৬৩৮ বিলিয়ন টাকা, ২০২১২২ অর্থ বছরে ৭৪৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা ও ২০২২২৩ অর্থ বছরে পরিশোধ করতে হবে ৮৬৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ উৎস হতে নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থ বছরে (২০২০২১) ৫৮২ দশমিক ৫ বিলিয়ন টাকা, ২০২১২২ অর্থবছরের জন্য ৬৮০ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২২২৩ অর্থ বছরের জন্য ৭৮৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের জন্য ২০২০২১ অর্থ বছরে ৫৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন টাকা, ২০২১২২ অর্থ বছরের জন্য ৬৮ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২২২৩ অর্থ বছরে ৮০ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা সুদ পরিশোধ করতে হবে। সরকার ২০১৪১৫ অর্থ বছরে ৩শ ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা, ২০১৫১৬ অর্থ বছরে ৩৩১ দশমিক ১ বিলিয়ন টাকা, ২০১৬১৭ অর্থ বছরে ৩৫৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা, ২০১৭১৮ অর্থ বছরে ৪১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা, ২০১৮১৯ অর্থ বছরে ৪৯৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা এবং ২০১৯২০ অর্থ বছরে ৫৭৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা পরিশোধ করেছে। এসব অর্থের মধ্যে ২০১৪১৫ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ২৯৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন টাকা, বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ ১৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা। ২০১৫১৬ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদে গেছে ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা। ২০১৬১৭ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদে গেছে ৩৩৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদে গেছে ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিড় কমলেও বিড়ম্বনা শেষ হয়নি
পরবর্তী নিবন্ধকঙ্গোর বিমানবন্দরের সুরক্ষায় বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষী