বিজ্ঞানী হয়ে উঠার গল্প শোনালেন সেঁজুতি সাহা

দৃষ্টির আড্ডা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৩ মে, ২০২২ at ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

নিজের বিজ্ঞানী হয়ে উঠার গল্প শোনালেন বাংলাদেশী অনুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা। গতকাল রোববার বিকালে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে এক আড্ডায় নিজের জীবনের এ গল্প শোনান তিনি। ‘ড. সেঁজুতি সাহার বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার গল্প’ শীর্ষক এ আড্ডার আয়োজন করে দৃষ্টি, চট্টগ্রাম।

ড. সেঁজুতি সাহা বাংলাদেশের শিশুস্বাস্থ্য গবেষণায় আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ) কাজ করছেন। বাংলাদেশের রোগীদের মধ্য থেকে সংগৃহীত নমুনা থেকে করোনা ভাইরাসের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করা গবেষক দলের অন্যতম ছিলেন ড. সেঁজুতি সাহা। বাংলাদেশ থেকে ‘ও’ লেভেল শেষ করা সেঁজুতি ২০০৫ সালে কানাডার টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হন। জৈব রসায়নে স্নাতক শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে আণবিক জিনতত্ত্বে পিএইচডি করেন তিনি। তার বাবা ড. সমীর সাহাও একজন অণুজীববিজ্ঞানী। আর মা ড. সেতারুন্নাহার গণস্বাস্থ্যের গবেষক।

ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন ছিল জানিয়ে সেঁজুতি বলেন, আমি বিজ্ঞানী হই, তা আমার পরিবার চায়নি। অংক এবং অর্থনীতিতে ভালো ছিলাম। তাই বাবা-মা চাচ্ছিলেন আমি যেন অর্থনীতিতে উচ্চ শিক্ষা নিই। ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক গল্পের বই পড়তাম। বিশেষ করে তিন গোয়েন্দা। একসময় বড় হয়ে নিজেকে একজন গোয়েন্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নও দেখছিলাম। কিন্তু সবসময় বাবা মায়ের কাজগুলো দেখে একসময় বিজ্ঞানী হওয়ারও স্বপ্ন তৈরি হয়। তবে ক্রাইম বের করার খুব আগ্রহ ছিল তিন গোয়েন্দা বই পড়ে। আমি যখন অণুজীব নিয়ে কাজ করি, তখনও ব্যাকটেরিয়াগুলোকে আমি ক্রাইম মনে করি।

তাই এখানেও নিজেকে গোয়েন্দাই মনে হয় আমার। বাবা-মায়ের সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ করে বিজ্ঞানে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়ে সেঁজুতি বলেন, দেশে ‘ও’ লেভেল পড়ার পর সিদ্ধান্ত নিই, দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করার। বাবা-মাকে না জানিয়েই কানাডার টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করি এবং সেখান থেকে কনফার্মেশন লেটার আসার পর পরিবারকে জানাই। পরিবারের সাহায্য আর নিজের একান্ত চেষ্টাতেই আজ আমি এই পর্যায়ে। যখন কোভিডের প্রথম জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করি, তখন হঠাৎ সারা দেশে সাড়া পড়ে যায়। আমি তখন অনেকের কাছ থেকে ম্যাসেজ পেতে থাকি। সেখানে অনেক মেয়ে আবার অনেক মায়েরাও তাদের সন্তানদের বিজ্ঞানী বানাতে চায়, এমন ম্যাসেজ পেতে থাকি। আমি তখন বুঝতে পারলাম, আমার এখন দেশের প্রতি অনেক দায়িত্ব। এরপর আমি ঢাকার বাইরে যেতে শুরু করি। সবার কথা শোনার চেষ্টা করি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আবৃত্তি করেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিলি চৌধুরী। এ সময় চবি শিক্ষক অধ্যাপক ড. অলক পাল, দৃষ্টি চট্টগ্রামের উপদেষ্টা সাফিয়া গাজী রহমান, দৃষ্টির সভাপতি মাসুদ বকুল, সাধারণ সম্পাদক সাবির শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আরাফাত ও দৃষ্টি চট্টগ্রামের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন চবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান। আড্ডায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি আদায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত
পরবর্তী নিবন্ধইউএসটিসি’র রিসার্চ সেলের সভা অনুষ্ঠিত