বিএমএর সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালালো পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতাল

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ at ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের সব বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়াগ্নস্টিক সেন্টার ও ব্যক্তিগত চেম্বার গতকাল মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকলেও বিএমএ’র ডাকে সাড়া দেয়নি পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল থেকে চেম্বারে রোগী দেখা থেকে শুরু করে অপারেশন পর্যন্ত সব চিকিৎসা কার্যক্রম চলেছে। পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর আহ্বানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএমএ।

বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা.মোহাম্মদ ফয়সল ইকবাল চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রক্তিম দাশের উপর হামলাকারী ছৈয়দ চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তার ও চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারের এনআইসিইউতে কর্তব্যরত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুর ওপর হামলার মুল আসামীসহ জামিন প্রাপ্ত আসামীদের জামিন বাতিলের দাবী ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সকল প্রকার প্রাইভেট প্র্যাকটিস (ব্যক্তিগত চেম্বার, হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি, ডায়াগ্নস্টিক সেন্টারে নতুন রোগীর সেবা) বন্ধ থাকবে।

বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক এ পূর্বদিনের ভর্তি রোগীর চিকিৎসা সেবা চলবে। ডায়াগ্নস্টিক সেন্টারে পূর্বের রোগীর রিপোর্ট ডেলিভারি দেয়া যাবে, কোন প্রকার নতুন রোগী এন্ট্রি বা সেবা দেয়া যাবে না। গত ১৭ এপ্রিল বিএমএ চট্টগ্রাম শাখা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, চট্টগ্রাম শাখা, বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতি, চট্টগ্রাম এবং বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কর্মসূচি পালিত হওয়ার কথাও জানানো হয়।

কিন্তু গতকাল সকাল থেকে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে রোগী ভর্তি, নতুন রোগীর রেজিস্ট্রেশন, চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং অপারেশন করা হয়েছে। গতকাল বেসরকারি এবং ট্রাস্ট পরিচালিত এই হাসপাতালে হাজার খানেক রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, আমাদের ম্যানেজিং ট্রাস্ট্রি ডা. রবিউল হোসাইন সাহেব আমাদেরকে রোগী দেখাসহ সব ধরণের কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

আমাদেরকে নতুন রোগী ভর্তি এবং অপারেশন করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান, চাকরি রক্ষার খাতিরে আমরা বিএমএর সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে রোগী দেখা এবং অপারেশন করেছি। গতকাল সন্ধ্যায়ও এই হাসপাতালে রোগীর চোখে অপারেশন করা হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বিষয়টি নিয়ে বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা.মোহাম্মদ ফয়সল ইকবাল চৌধুরী টেলিফোনে জানান, প্রফেসর রবিউল হোসেন সাহেব নিজেকে আইনের উর্ধ্বে মনে করেন। তিনি কোন কিছুরই তোয়াক্কা করেন না। কউকে পাত্তা দিতে চান না। তিনি মনে করেন, তিনিই সব। ডা. ফয়সল তাঁর এমন আচরণের নিন্দা জানিয়ে ভলেন, এসব আচরণের কারনেই প্রফেসর রবিউল হোসেন ভয়াবহ রকমের কর্মফল ভোগ করছেন। তাঁর কপালে আরো দুর্ভোগ আছে বলেও বিএমএ সেক্রেটারি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে গতরাতে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্ট্রি প্রফেসর ডা. রবিউল হোসাইনের মতামত নেয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রক্তিম দাশের ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ১৪ এপ্রিল সকালে নগরীর মেডিকেল সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন শিবলু হামলার শিকার হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহিট স্ট্রোক থেকে রক্ষায় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকোতোয়ালীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার ৪