বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকা চায় সিডিএ

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ।। লক্ষ্য দ্রুত কাজ শেষ করা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য এই টাকা বরাদ্দ চেয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। চলতি বছর সিডিএর এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪শ কোটি টাকা প্রদানের কথা ছিল। সিডিএ এই টাকা দিয়ে খালের জন্য জমি অধিগ্রহণসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করা সম্ভব হবে না বলে উল্লেখ করে বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের অনুরোধ জানায়।
এদিকে নগরীর ৩৬টি খাল উদ্ধার এবং খালের পাড়ে প্রয়োজনীয় রাস্তা ও ফুটপাত নির্মাণের জন্য ৭টি এলএ কেস মূলে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা হুকুম দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর দুর্ভোগের বড় কারণ জলাবদ্ধতা। ঘণ্টা দুয়েকের বৃষ্টিতে ডুবে যায় নগরী। এই অবস্থা থেকে নগরীকে রক্ষা করতে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর জলাবদ্ধতার কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খাল সংস্কার, খনন এবং সম্প্রসারণ ছাড়াও খাল দখল করে থাকা প্রায় ৩ হাজার ১৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এছাড়া ২৪০ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার, খালের পাড়ে ১৭৬ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, খালগুলোর এক পাশে ১৫ ফুট চওড়া রাস্তা, অপর পাশে ৫ ফুট ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ৫৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত পাঁচটি খালের মুখে স্লুইচ গেট নির্মাণ প্রকল্পটিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালে নেয়া প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যায় প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়িত হয়নি। আগামী জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির সময় রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না।
প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খাল পরিষ্কার, খালের পাড়ে রাস্তা নির্মাণ এবং ফুটপাত নির্মাণে বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ কিছু ব্যক্তিগত ভূমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭টি এলএ কেসের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন উক্ত ভূমি অধিগ্রহণ করতে প্রচুর টাকার প্রয়োজন, যা এককালীন পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া প্রকল্পের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ রয়েছে, যা শুষ্ক মৌসুমে করা না হলে বর্ষায় করা যাবে না। এতে করে চলতি শুষ্ক মৌসুমে প্রকল্পের জন্য প্রচুর টাকা দরকার। অথচ পুরো বছরের জন্য এই প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় ৪শ কোটি টাকা; যা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় মেটানোসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় সিডিএ নতুন করে বাড়তি ১ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চেয়েছে। চলতি বছর এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের বাইরে এই থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়।
সিডিএ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ প্রদানের আবেদন করে। গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় থেকে এই আবেদন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ টিম চট্টগ্রামে এসে প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছে। বাড়তি থোক বরাদ্দের যৌক্তিকতা দেখার জন্য কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে।
সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি জলাবদ্ধতা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে। ১ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই টাকা জরুরি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতাদের সমালোচনায় কিছু আসে যায় না : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ‘পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায়’ স্ত্রী সন্তান হত্যা