বাবার ‘পঙ্গুত্ব বরণের খবরে’ পা হারা ছেলের আত্মহত্যা

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১ অক্টোবর, ২০২২ at ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ

৭ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে একটি পা হরান হৃদয় শীল (২২)। পঙ্গুত্ব বরণের পর অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি ছিলেন বাবা। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা এবার কেড়ে নেয় সেই উপর্জনক্ষম বাবার স্বাভাবিক জীবন। আর তা ‘মেনে নিতে না পেরে’ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হৃদয় শীল। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কেঁওচিয়া শীল পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে সাতকানিয়া থানা পুলিশ।
সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউপি সদস্য আবু তালেব জানান, ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের শীল পাড়ার স্বপন শীলের ছেলে হৃদয় শীল গত ৬-৭ বছর আগে কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কের সাতকানিয়াস্থ চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় ট্রলির (ভটভটি) ধাক্কায় আহত হয়ে একটি পা হরান। এরপর থেকে পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করে আসছিলেন হৃদয়। তার বাবা স্বপন শীল ঠাকুরদীঘি এলাকায় সেলুনের কাজ করে সংসার চালাতেন। গত শনিবার স্বপন শীল কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কের সাতকানিয়াস্থ আমতল এলাকায় মোটর সাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন স্বপন শীল। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অস্ত্রোপচার করে তার পায়ে রড লাগানো হয়েছে। এ খবর সহ্য করতে পারেনি তার পঙ্গু ছেলে হৃদয় শীল। গত বৃহস্পতিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতো খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন হৃদয়। গতকাল দুপুর পেরিয়ে যাওয়ার পরও ঘুম থেকে না উঠায় বোন সুমি শীল তাকে ডাকতে যায়। অনেকক্ষণ ডাকার পরও সাড়া না দেয়ায় সুমি জানালা দিয়ে দেখেন হৃদয় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে স্থানীয় লোকজন হৃদয়কে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের খবর দেয়। এরপর খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানায় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করা হৃদয় শীলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় হৃদয় শীলের বোন সুমি শীল বাদি হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে ১ লাখ ইয়াবাসহ একজন আটক
পরবর্তী নিবন্ধআইজিপির দায়িত্ব নিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন