বাবর-লিমনসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

সিআরবির জোড়া খুন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১ মার্চ, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

আলোচিত সিআরবির জোড়া খুন মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৬৪ আসামির মধ্যে ৬৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাদ দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম কারাগারে খুনের শিকার অমিত মুহুরীকে। এ সময় কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুসহ এজাহারভুক্ত ৫৪ জন আসামি। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিন বিচার শুরুর এ আদেশ দেন। মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চার্জের জন্য দিন ধার্য ছিল। সে হিসেবে চার্জগঠন হয়েছে। আগামী ২৫ মে থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। তিনি বলেন, অমিত মুহুরী ছাড়া ৬৩ আসামির মধ্যে ৫৯ জন জামিনে ছিলেন। এর মধ্যে বারব, লিমন ও আলমগীর টিপুসহ ৫৪ জন আদালতে হাজির ছিলেন। ৫ জন (ইলিয়াছ, হাসমত আলী রাসেল, জাফর, রাজু মুন্সী ও রানা) অনুপস্থিত থেকে সময়ের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে দেন এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাকী চারজন (অসিত চক্রবর্তী, সুমন চৌধুরী, টিটু দাশ ও নুরুচ্ছফা প্রকাশ টিপু) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দু’পক্ষের ৬২ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সে সময় আসামি পক্ষের নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ আড়াই বছর পর পিবিআই নতুন করে দু’জনকে যুক্ত করে মোট ৬৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে। সম্পূরক চার্জশিটে অভিযুক্ত ৬৪ আসামি হলেন, যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর ও তার গ্রুপের যুবলীগ নেতা রিটু দাশ, প্রেমাশীষ মুৎসুদ্দী, অজিত বোস, মোহন তাঁতী, খোকন চন্দ্র তাঁতী, অমিত মুহুরী, অজিত দাশ, চান মিয়া, রাজু, রাকেশ, সুমন, টিটু দাশ, লাবলু ঘোষ, টিপু, আসলাম, ছোটন বড়ূয়া, সুমন চৌধুরী, শিবু দাশ চৌধুরী, শিমুল প্রসাদ পিন্টু, ফারুক, জসিম, মনির মিয়া, আনু মিয়া, ইউসুফ, জাহিদ, জহির, ফরিদ ও মনির।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন ও তার গ্রুপের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা অমিত চক্রবর্তী শশি, মোহাম্মদ টিপু, ওসমান গণি দুলু, মনোয়ারুল আলম চৌধুরী, জাহেদ, আমিন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শরীফ আহমেদ, আমির হোসেন আমু, রায়হান আহমদ, কামরুল হাসান, নজরুল ইসলাম, রানা আহমেদ, মনিরুজ্জামান দিনার, হাসমত আলী রাসেল, সুজয়মান বড়ুয়া, জমির উদ্দিন, আবু জাফর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, রাজু মুন্সী, ফয়সাল আহমেদ, মিজানুর রহমান, জাফর, পিয়াল আইচ, তারেকুর রহমান, ইলিয়াছ, জাবেদ হোসেন, রুবেল চন্দ্র দাশ, নাজমুল হাসান, আশরাফুল হোসেন, মিলন, আশরাফুল আলম, রবিউল ইসলাম জিলানী, কিয়াস কুমার দাশ ও বিশ্বজিত দাশ।
উল্লেখ্য, রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর এবং ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম ওরফে লিমনের অনুসারীদের মধ্যে নগরীর সিআরবি (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর) এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিতে প্রাণ হারান যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও আট বছর বয়সী মোহাম্মদ আরমান নামের এক শিশু। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদি হয়ে বাবর-লিমনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধমোটরসাইকেলে ট্রাকের ধাক্কা, ৩ জন ছুরিকাহত