বানরের লাজুক প্রজাতি

অর্ক রায় সেতু | বুধবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

বানর মানে দুষ্টু একটা প্রাণী। বানরের কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে ভীষণ রকমের বিরক্তিকর। খাবার, মাথার টুপি, চশমা, ব্যাগ, জুতো চুরি করে পালিয়ে যায় বানর। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে লোকালয়ের ভেতরে বানরের বসবাস দেখা যায়। সেখানে মানুষ আর বানর খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে বসবাস করে। বাংলাদেশেও বানরের অস্তিত্ব রয়েছে। আমাদের দেশে মানুষের হিংস্রতায় খুব একটা বানরকে লোকালয়ে নেমে আসতে দেখা যায় না। তবে ছবির বানরটি সচরাচর চোখে পড়ে না। সাধারণ বানরের প্রজাতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। আকার আকৃতি দেহ গড়ন এদের সম্পূর্ণ আলাদা। শরীর বাদামী ও ধূসর রঙের পশমে আবৃত। এদের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত লম্বা বাদামী দাগ দেখা যায়। ছোট লেজ রয়েছে। মুখমণ্ডল দেখতে গোলাকার। চোখগুলো অনেকটা পেঁচার চোখের মতো।
বানরের বিভিন্ন প্রজাতির মাঝে এটি একটি বিপন্ন প্রজাতি। এদের নাম দেওয়া হয়েছে লজ্জাবতী বানর। বানরের এই প্রজাতি একা থাকে। ঝগড়াঝাঁটি ঝামেলা এরা পছন্দ করে না। তাই মানুষের আশপাশে খুব একটা দেখা যায় না। চলাফেরা করে অনেক ধীরগতিতে। গাছগাছালির আড়ালে লুকিয়ে থাকে এরা। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সিলেটের বনবাদাড়ে লজ্জাবতী বানরের আবাসস্থল। সেখানে একডাল থেকে অন্য ডালে চড়তে দেখা যায় এদের। স্বভাবে শান্ত হওয়ায় মানুষকে একটুও বিরক্ত করে না লজ্জাবতী বানর। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে লজ্জাবতী বানরের দল। একসময় এরা দল বেঁধে ছুটে বেড়াত। খাবার হিসেবে এরা সব ধরনের খাবার গ্রহণ করে। ছোট কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম, ফলফলাদি। দিনে ৫০০ গ্রামের মতো খাবার খেয়ে থাকে এই লজ্জাবতী বানর। এদের প্রজনন কাল এক বছরের ও বেশি সময় ধরে চলে। মাত্র একটি বাচ্চা প্রসব করে এরা। বাচ্চাটি পূর্ণবয়স্ক হতে ১৮-২৪ মাস সময় নেই। লজ্জাবতী বানরের গড় আয়ু ২০ বছর হয়ে থাকে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম : Nycticebus Bengalensis.

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৃষ্টিতে
পরবর্তী নিবন্ধশৈশবের বর্ষা