বাঙালি জাতির গর্ব ও অহংকারের প্রতীক

প্রদীপ ভট্টাচার্য্য | শনিবার , ২৫ জুন, ২০২২ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

পদ্মা সেতু। পদ্মা পাড়ের কোটি মানুষের স্বপ্নের এই সেতু কেবল যান চলাচলের সেতু নয়, দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা, আত্মমর্যাদা, বাঙালি জাতির গর্ব, অহংকার ও গৌরবের প্রতীক। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা ও অস্থিতিশীল নদী পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, আত্মবিশ্বাস, সততা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে।

পদ্মা পাড়ের মানুষ কখনো কি ভাবতে পেরেছে ভয়ংকর খরস্রোতা পদ্মার বুকে কোনোদিন এই সেতু নির্মাণ করতে পারবে! আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করে নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসের নিজস্ব অর্থায়নে সর্ববৃহৎ এই সেতু যা এখন দেশ তথা বিশ্বের মডেল। এই সেতুর কাজ শুরু থেকে বহু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র যেমন হয়েছে ঠিক তেমনি করোনাকালীন বিশ্ব অর্থনীতিতে যে প্রবল ঝাঁকুনি লেগেছে এবং তার প্রকোপে যখন থেমে গেছে পুরো বিশ্ব তখনো পদে পদে বাধা এসেছে কাজ থামিয়ে দেয়ার কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্ত আর দূরদর্শী নেতৃত্ব করোনাকালীন সময়েও নির্মাণ কাজ চলেছে পুরোদমে যা এখন বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনেক বড় প্রাপ্তি হয়ে থাকবে দুই পাড়ের মানুষের স্বপ্নের এই সেতু। শুধু তাই নয়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের যানজট, ফেরির সংকট, অতিরিক্ত ফেরি ভাড়া, দালালের দৌরাত্ব্যসহ নানা কারণে নানাভাবে নাজেহাল হওয়া, কাঁচা পণ্যের গাড়ি দিনের পর দিন ফেরির সিরিয়ালে আটকে থেকে মালামাল পচে যাওয়াসহ নানা ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে সাধারণ জণগণ ও ব্যাবসায়ীরা।এছাড়া একসময়ে অবহেলিত দক্ষিণের জনপদ পটুয়াখালী পদ্মাসেতু চালুর ফলে উন্নয়নের মহাসড়কে পরিণত হবে। এই অঞ্চলের মানুষের ঢাকার সঙ্গে লঞ্চ ও ফেরি নির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভোগান্তি ছিল নিত্য সঙ্গী। পদ্মাসেতু চালুর ফলে ঢাকা-কুয়াকাটা রুটের ফেরি যুগের অবসান ঘটবে। ফেরিবিহীন যান চলাচলে নতুন যুগে প্রবেশ করবে এই অঞ্চলের মানুষ। পাশাপাশি উন্নত হবে মানুষের জীবন যাত্রার মান। দেশ হবে সমৃদ্ধ এবং বিশেষ করে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাবে কৃষিখাতে।

শুধু তাই নয় দৃশ্যমান এই সেতুর ফলে দুই পাড়ে হোটেল-মোটেল ও পর্যটকের আবাসন সুবিধা সৃষ্টি হবে। পর্যটকদের ভীড় যেমন বাড়বে ঠিক তেমনি বড় বড় বিনিয়োগ আসবে, প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ক্রমান্বয়ে ছোট-বড় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে। যার ফলে লক্ষ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবার পাশাপাশি অর্থনীতিতেও শুধু বড় ধরনের পরিবর্তনেই আনবে না এই সেতু চালুর ফলে দক্ষিণাঞ্চলে দ্রুত শিল্প কলকারখানা ও কৃষিনির্ভর কলকারখানার চালুর ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির সোপান জিডিপির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদ্মা সেতু : সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের সাহস, সক্ষমতা ও গর্বের প্রতীক