বন্দরে কন্টেনারে আগুন

বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, তদন্ত কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৩ মে, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

দাহ্য পদার্থে ভর্তি একটি কন্টেনার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগে গেলেও ভাগ্যক্রমে চট্টগ্রাম বন্দরে বড় কোনো অঘটন ঘটেনি। বন্দরের ৪ নং গেটের ৮ নম্বর ইয়ার্ডে রাখা একটি কন্টেনারে গতকাল শনিবার সকালে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে অতি তাপমাত্রায় কন্টেনারটিতে রাখা সোডিয়াম পার কার্বনেটে আগুন লেগে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বন্দর সূত্র জানায়, ঢাকার গাজীপুরের নন অ্যানিম্যাল হেলথ প্রোডাক্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চীন থেকে অ্যাকুরিয়ামের মাছের অক্সিজেন যোগানোর ট্যাবলেট আমদানি করে। নন ডেঞ্জারাস কার্গো ঘোষণা দিয়ে অক্সিজেন সাপ্লিমেন্ট ফিশ পন্ডস সোডিয়াম কার্বনেট ট্যাবলেটগুলো আনা হয়। বিশ ফুটি কন্টেনারের অর্ধেক বোঝাই ছিল এসব পণ্যে। ৯ মে এমভি কেপ ওরিয়েন্ট জাহাজ থেকে খালাসের পর কন্টেনারটি (নম্বর এফসিআইইউ ৫৬৩৯২৬৮) বন্দরের ৮ নম্বর ইয়ার্ডে রাখা হয়। বন্দরের চার নম্বর গেট সংলগ্ন এই ইয়ার্ডে গতকাল সকালে কন্টেনারটিতে আগুন ধরে যায়। বিপুল বেগে ধোয়ার কুণ্ডলী বের হতে শুরু করলে বন্দরজুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বন্দর ও আগ্রাবাদ স্টেশনের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পেঁৗঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বেলা ১১টা নাগাদ আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কন্টেনারের ভেতরে থাকা সব পণ্য পুড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত কন্টেনারটিকে স্লট থেকে সরিয়ে ৪ নম্বর গেট সংলগ্ন খালি একটি ইয়ার্ডে নিয়ে যান।
স্লটের ভিতরে কন্টেনারটিতে আগুন লাগলেও এই কন্টেনারের সাথে লেগে থাকা অন্যান্য কন্টেনারে আগুন লাগেনি বা ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি জানান, কন্টেনারে আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে বন্দরের ডেপুটি ডিরেক্টর (সিকিউরিটি) লে. কমান্ডার মাসুদুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট প্রদান করবে। বিশেষ করে কন্টেনারের পণ্যগুলোর ব্যাপারে কোনো মিথ্যা ঘোষণা ছিল না তাও অনুসন্ধান করা হবে।
ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র জানায়, কন্টেনারটিতে মাছের খাবার হিসেবে আনা সোডিয়াম পার কার্বনেট ট্যাবলেট মারাত্মক দাহ্য একটি পণ্য। এই ধরনের দাহ্য পদার্থ যেভাবে প্যাকেজিং করার কথা সেভাবে কন্টেনারের ভেতরে করা হয়েছে বলে মনে হয় না। তাছাড়া এই ধরনের পণ্য বোঝাই কন্টেনার যে তাপমাত্রায় রাখার কথা এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। বেশি তাপমাত্রার কারণে কন্টেনারের অঙিজেন সাপ্লিমেন্ট ট্যাবলেটগুলোতে আগুন ধরে যেতে পারে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅপ্রদশির্ত অর্থ বৈধের ঢালাও সুযোগ বাতিল চায় টিআইবি
পরবর্তী নিবন্ধসাগরে লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা